রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১১ অপরাহ্ন

পি কে হালদারের সহযোগী সিদ্দিকুরের ২৩.৩৬ কোটি টাকার শেয়ার জব্ধ করেছে দুদক

দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
দেশের বহুল আলোচিত বিদেশে বিপুল পরিমান অর্থপাচারের অন্যতম অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) সহযোগী এবং এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেষ্টমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমানের ২৩ কোটি টাকার অস্থাবর ( শেয়ার) জব্ধ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াতের আবেদনের প্রেক্ষিতে মহানগর সিনিয়র বিশিষ জজ আদালত মো. সিদ্দিকুর রহমানের ২৩ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তি জব্ধের আদেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য ২০২২ সালের ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে। বর্তমানে তারা ভারতের কারাগারে আছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুদক কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি আদালতের নিদেশে অভিযুক্ত সিদ্দিকুর রহমানের নামে সিমটেক্স ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের ১০ টাকা মূল্যের মোট ১৬ কোটি ৭২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৯০ টাকার ১ কোটি ৬৭ লাখ ২৮ হাজার ৭৩৯টি শেয়ার, তার আত্মীয় মাহফুজা রহমানের নামে ২ কোটি ৩৮ লাখ ৭১ হাজার ৫৫০ টাকার শেয়ার, নিয়ার রহমান সাকিবের নামে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৩ হাজার ৬০০ টাকার শেয়ার, ইসতিয়াক রহমান ইমরানের নামে ১ কোটি ৪৯ লাখ ৬১ হাজার ৪৩০ টাকার শেয়ার এবং অপর আত্মীয় মো. ইনসাফ আলী শেখের নামে ১ কোটি ৪১ লাখ ৯৩ হাজার ৩০০ টাকার শেয়ার। সব মিলিয়ে ২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার জব্ধ করা হয়েছে।

গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, দুদকের মামলার পলাতক আসামী বর্তমানে ভারতে কারাবন্দি পি কে হালদার চক্র কিংবা তার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দুদক দীর্ঘদিন থেকেই কাজ করছে। অনুসন্ধান কিংবা তদন্ত যে পর্যায়েই হোক দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা যদি মনে করে কারও সম্পদ জব্ধ বা ক্রোক করা দরকার, তখনই আদালতের অনুমতি নিয়ে তা করতে পারে।

দুদক সচিব আরও বলেন, স¤প্রতি পি কে হালদার চক্রের অন্যতম ব্যক্তি মো. সিদ্দিকুর রহমান। ওই কোম্পানিতে তার প্রায় ২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ারের তথ্য পাওয়া গেছে। এর পর দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা আদালতের কাছে ওই শেয়ার জব্ধ করার আবেদন করলে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশে এই শেয়ার জব্ধ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দুদকের মামলার আসামী মো. সিদ্দিকুর রহমান বিদেশে পলাতক থাকায় অবৈধ পন্থায় অর্জিত অস্থাবর সম্পদ তার আত্মীয় স্বজনকে দিয়ে তার নিয়ন্ত্রণাধীন বিএসইসির লিস্টেড প্রতিষ্ঠান সিমটেক্স ইন্ড্রাস্ট্রিজ লি. এর শেয়ার বিক্রির চেষ্ঠা করছেন। তিনি এসব অর্থ পাচারসহ অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর কিংবা বন্ধক রাখার প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। পরে গোপন সংবাদে জানতে পেরেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা আদালতের নজড়ে আনেন এবং শেয়ারগুলো জব্ধের আবেদন জানান। কারণ অনেক আগেই আসামীর নামে মামলা দায়ের করেছে দুদক।

২০২২ সালের ১৯ মে দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এনআরবি গেøাবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও ভারতে পলাতক পি কে হালদারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক। মামলায় কাগুজে প্রতিষ্ঠান দিয়া শিপিং লিমিটেডের নামে এফএএস(ফাস) ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৪৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। মামলার আসামীরা হলেন; এনআরবি গেøাবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি ও পলাতক পিকে হালদার, এন্ড বি ট্রেডিংয়ের মালিক সুব্রত দাস ও শ্রভ্রা রাণী ঘোষ, এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেষ্টমেন্টের চেয়ারম্যান এম.এ হাফিজ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক অরুণ কুমার কুÐু, অঞ্জন কুমার রায়, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জ্বল কুমার নন্দী, সত্য গোপাল পোদ্দার এবং এফএএস ফাইন্যান্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

মামলার উল্লেখ করা হয়েছে, আসামীরা পরস্পর অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক প্রতারণার মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান এন্ড বি ট্রেডিং এর নামে জাল রেকর্ডপত্রাদির প্রতিষ্ঠানের মালিককে ঋণ পেতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন। তারা ঋণের বেনিফিসিয়ারী এফএএস ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট থেকে ৪৪ কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে উক্ত অর্থ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে গোপনে পাচার করেন। এসব অপরাধে তাদের বিরুদ্ধে দÐবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সনের দুদক আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও (৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সূত্র মতে, পি কে হালদার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মোট ৪৩টি মামলা দায়ের করেছে দুদক। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের অর্থ আত্মসাতে ২২টি মামলা ও এফএএস লিজিংয়ের অর্থ আত্মসাতে ১৩ মামলা হয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সম্পদের মামলা রয়েছে। যার মধ্যে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে ২২ বছরের সশ্রম কারাদÐ দিয়েছেন আদালত। # একে


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৩ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০০ অপরাহ্ণ
  • ৪:৩১ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৮ অপরাহ্ণ
  • ৭:৪৭ অপরাহ্ণ
  • ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12