সর্বশেষঃ
বনানীতে ৩ রেস্তোঁরাকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, ভুয়া ঠিকানায় ট্রেড লাইসেন্স উন্নয়নকাজে সমন্বয়হীনতায় সরকারি অর্থের অপচয় গৃহায়নের প্রকৌশলী আলম ঘুষের দেড় লাখ টাকাসহ গ্রেপ্তার বছিলায় সরকারি খালে নির্মাণাধীন  ৬টি বড় স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছেন ডিএনসিসির মেয়র ডিএসসিসির ১ ইঞ্চি জমিও আর কেউ অবৈধভাবে দখলে রাখতে পারবে না মেয়র তাপস  RAJUK Employee Management System (REMS)-বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত ডেঙ্গু মোকাবিলা করা বড় চ্যালেঞ্জ : মেয়র আতিকুল ইসলাম শেখ হাসিনাকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ও জর্জিয়ার প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন শিশু আয়ানের মৃত্যু, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রিপোর্ট হাস্যকর : হাইকোর্ট ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০২:৪৩ অপরাহ্ন

খিলগাঁও মাটির মসজিদে, ফকির আলমগীরের শেষ বিদায়

আবু দারদা যোবায়ের, দূরবীণ নিউজ :

মায়ের এক ধার দুধের দাম কাটিয়া গায়ের চাম ,পাপুষ বানালেইও মায়ের ঋণ শোধ হবে না, ,,এই গান সহ অসংখ্য গানের জনপ্রিয় গণ সংগীত শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আলমগীর। তাকে আজ শনিবার খিলগাঁও মাটির মসজিদে সর্বশেষ জানাজা শেষে তালতলা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ এই গুনী গন সংগীত শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। শহীদ মিনারে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে প্রয়াত সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

ফকির আলমগীর এর প্রথম জানাজা বেলা ১১টায় খিলগাঁও পল্লীমা সংসদ চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা কে গার্ড অব অনার বা রাস্ট্রীয় সম্মামনা জানানো হয়।

শহীদ মিনারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর মরদেহ নেয়া হয় খিলগাঁও এলাকায়। এখানকার মাটির মসজিদে জোহরের নামাজের পর সবশেষ জানাজা শেষে তালতলা কবরস্থানে দাফন করা হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শব্দ–সৈনিককে।

   শহীদ মিনারে স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীরের আবেগময় নিবেদন :

এদিকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তাঁকে নিয়ে আসা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। শহীদ মিনারে ফকির সুরাইয়া আলমগীর সরকারের কাছে দাবি জানান, ফকির আলমগীর ছিলেন গণমানুষের শিল্পী।

তিনি যেমন সাধারণ লোকের জন্য শত শত গান করেছেন, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর গান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছে। শোষণ, অন্যায় ও অবিচারের কথা তিনি গানে গানে বলেছেন। তাঁর মতো এমন বলিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধাকে যেন পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নতুন প্রজন্ম যেন তাঁর মতো আদর্শ শিল্পীকে চিনতে পারে।

সরকারের কাছে তার পরিবারের দাবি মরনোত্তর হলেও যেন তাকে স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়।

 

তালতলা কবরস্থানে দাফনের সময় পরিবার পরিজন, আত্নীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী,বিভিন্ন পেশাজীবিরা ছাড়াও জাতীয় পার্টি নেতা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি আলমগীর শিকদার লোটন অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

গত শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

ফকির আলমগীরকরোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৫ জুলাই মধ্যরাত থেকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ফকির আলমগীর। ১৮ জুলাই চিকিৎসকেরা তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেন। শুক্রবার ২৩ জুলাই রাত সাড়ে নয়টার দিকে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসাধীন এ শিল্পীর হার্ট অ্যাটাক হয় বলে গণমাধ্যম কে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে মাশুক আলমগীর রাজিব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা ফকির আলমগীর সরকারী প্রতিস্ঠানে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করছেন। জনসংযোগে কাজ করছেন তিনি। গেয়েছেন গন সংগীত। গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন ফকির আলমগীর।

ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বরেণ্য শিল্পীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশের সংগীতাঙ্গনে, বিশেষ করে গণসংগীতকে জনপ্রিয় করে তুলতে তাঁর ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

আরো জানা যায়, ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় দিনটিতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা।

স্বাধীনতার পর পাশ্চাত্য সংগীতের সঙ্গে দেশজ সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা পপগানের বিকাশে ভূমিকা রাখেন শিল্পী ফকির আলমগীর। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তাঁর কণ্ঠে ‘সান্তাহার জংশনে দেখা’, ‘বনমালী তুমি’, ‘কালো কালো মানুষের দেশে’, ‘মায়ের একধার দুধের দাম’, ‘আহা রে কাল্লু মাতব্বর’, ‘ও জুলেখা’সহ বেশ কিছু গান তুমুল জনপ্রিয়তা পান তিনি।

এর মধ্যে ‘ও সখিনা’, ‘নাম তার ছিল জন হেনরি’সহ আরও কিছু গান মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্যসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেয়া হয়।
সরকারের কাছে তার পরিবারের দাবি মরোনোত্তর হলে তাকে যেন স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়।
নিরহংকার, সহজ, সরল গণমানুষের মুক্তির জন্য আজীবন সংগ্রামী কিংবদন্তী এই গুনী শিল্পী ফকির আলমীর ছিলেন বিনয়ী, নিরহঙ্কারী শিল্পী।

নব্বুই দশকের মাঝামাঝি সাহিত্য- সাংস্কৃতিক সংবাদের প্রতি ঝোঁক ছিল আমার । সংবাদ কভার করতে বা সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে দেশি বিদেশি শিল্পীদের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হতো। ফকির ভাই’র সঙ্গে এ সুবাদে পরিচয় হয়। আমার কাছে প্রায়ই আসতেন জনকন্ঠভবনে। নব্বুই দশকের শেষদিকে তাঁর একটি বই প্রকাশিত হয়।

ওই সময় অমর একুশে উদযাপন কিংবা পয়লা বৈশাখ পালনে ফকির আলমগীর এর গড়া ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের তোরণ বা শিশুপার্কের সামনের উন্মুক্ত মঞ্চে গণসঙ্গীতের আয়োজন করতেন। তিনি পেয়েছেন একুশে পদক। দেশি বিদেশি নানা সম্মানে ভূষিত হয়ে নব্বুই দশকের তুলনায় অনেক বড় মাপের শিল্পী হিসাবে সুনাম কুড়িয়েছেন।

সবাইকে যা মুগ্ধ করতো তা হলো তার আচার-ব্যবহার। তিনি সব সময়ই ছিলেন আছেন আগের মতোই। বড়ত্বের কোন ছাপ তিনি দেখাননি। মনেপ্রাণে শিল্পভাবনায় ছিলেন বড়, অহংকারে নয়। বিনয়ের জন্য দেখা হলেই জড়িয়ে ধরে প্রাণখোলা হাসি আর হৈ চৈ করে কুশল জিজ্ঞাসা করতেন সবার সঙ্গে।

আজ এই মহানশিল্পীর প্রয়াণে ব্যথিত হয়েছি। অনেক স্মৃতি এসে ভিড় করছে মনের কোঠায়। তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে শোক সন্ত প্ত পরিবারের প্রতি অসংখ্য ভক্ত, অনুরাগী ও শুভাকাঙ্ক্ষী সমবেদনা জানিয়েছেন।

 

/ এডিজেড/একে/দূরবীণ নিউজ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:১১ অপরাহ্ণ
  • ৪:২৬ অপরাহ্ণ
  • ৬:১১ অপরাহ্ণ
  • ৭:২৪ অপরাহ্ণ
  • ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12