দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় ৫ বছরের কারাদন্ড প্রাপ্ত আসামী ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। তিনি ভুয়া আমমোক্তারনামার মাধ্যমে শ্বশুর ও আত্মীয়-স্বজনদের নামে গুলশানে ১০ কাঠার প্লট নিজে দখল করেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের একক হাইকোর্ট বে ৬ মাসের জন্য কুতুব উদ্দিন আহমেদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশিদ আলম খান এবং আসামী কুতুব উদ্দিন আহমেদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন। গণমাধ্যমকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খুরশিদ আলম খান।
তিনি বলেন, কুতুবের শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধার নামে ওই জমি ক্রয় করা হলেও তিনি কখনই এ জমি ভোগদখল বা বসবাস করেননি। শুরু থেকেই কুতুব উদ্দিন এই জমি ভোগদখল এবং সেখানে সপরিবারে বসবাস করছিলেন।
দুদকের আইনজীবী , ভুয়া আমমোক্তারনামার মাধ্যমে গুলশানে রাজউকের ১০ কাঠার একটি প্লট বরাদ্দের মামলায় গত ১৪ ফেব্রæয়ারি আসামী কুতুব উদ্দিন আহমেদকে পাঁচ বছরের কারাদন্ডদেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। এর পরে গত ১৫ মার্চ নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে কুতুবের আপিল শুনানির জন্য নেন হাইকোর্ট। এরপর কয়েকবার তিনি আদালতে জামিন আবেদন করেন। আজ হাইকোর্ট তাকে ৬ মাসের জামিন দেন।
দুদকের আইনজীবী বলেন, ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রাসনিক কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করে দুদকের উপপরিচালক মির্জা জাহিদুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল। এর আগে গুলশান থানায় কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন মির্জা জাহিদুল আলম।
কুতুব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সপ্লট তার শ্বশুরসহ কয়েকজনের নামে বরাদ্দ করেন। শ্বশুর ও স্বজনদের নামে গুলশান অভিজাত এলাকায় সরকারি ১০ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে নিজেই বসবাস করার অভিযোগে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল গুলশান থানায় মামলা করে দুদক। ওই মামলায় কুতুবের সঙ্গে নাজমুল ইসলাম সাঈদকেও আসামি করা হয়। একই বছরের ১২ এপ্রিল কুতুবকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করে ভূমি মন্ত্রণালয়।
সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুতুব গুলশানে রাজউকের অধিগ্রহণ করা সাড়ে ১৬ শতাংশ (১০ কাঠা) জমি শ্বশুর ও অন্যদের নামে ক্রয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করার বিষয়টি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।
১৯৬৪ সালে গুলশান-বারিধারা আবাসিক মডেল টাউন সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য রাউক ৩১ একর ১৪ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে এ জমি নিচু জলাশয় হওয়ায় রাজউকের জন্য অলাভজনক হবে বলে ১৯৬৯ সালে এ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।এরপর রাজউক পুনরায় ওই ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে এ নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলে। এরপর ২০০৪ সালে উচ্চ আদালতের এক রায়ে ওই ভূমির ওপর রাজউকের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে, আসামী কুতুব ভূমি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থেকে প্রভাব বিস্তার করে কৌশলে এক গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে রাজউকের সম্পত্তি অবমুক্ত করে নাজমুল ইসলাম সাইদকে জমির ভুয়া আমমোক্তার সাজিয়ে এবং শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধাসহ আরও দুজনকে ক্রেতা সাজিয়ে নিজেই ১০ কাঠা জমি আত্মসাৎ করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, কুতুবের শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধার নামে ওই জমি ক্রয় করা হলেও তিনি কখনই এ জমি ভোগদখল বা বসবাস করেননি। শুরু থেকেই কুতুব উদ্দিন এই জমি ভোগদখল এবং সেখানে সপরিবারে বসবাস করছিলেন।#