দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যে অভিযোগে ব্যারিষ্টার ন্জামুল হুদার দায়ের করা মামলটি বিচার বিভাগের জন্য হুমকিস্বরূপ বলেছেন হাইকোর্ট।‘এ ধরনের মিথ্যে মামলা করে বিচার ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
হাইকোর্ট বলেছেন, এভাবে মামলা করলে সুপ্রিম কোর্ট থাকবে না। সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা ও ইমেজ রক্ষা করার দায়িত্ব সবার।’ উচ্চ আদালত মিথ্যে মামলা দায়েরকারী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় দুদকের করা বিচারাধীন মামলাটি আগামী ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৭ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বে এমন মন্তব্য করেন। হাইকোর্ট আসামী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার পক্ষের আইনজীবী আশানুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ’যা কিছু করেন, বুঝে-শুনে করবেন। অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়।’
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। পরে হাইকোর্ট দুদকের দায়ের করা মামলা বাতিল চেয়ে আসামী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেন। একই সঙ্গে মামলাটি ৬ মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ফলে নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে বিচারিক আদালতে মামলা চলতে আর বাধা রইল না।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক মামলার এজাহার থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, ২০১৮ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে হওয়া একটি মামলা উচ্চ আদালতে ডিসমিস করার পরও প্ররোচিত হয়ে রায় পরিবর্তন করা হয়। মামলাটি ডিসমিস করতে দুই কোটি টাকা এবং অন্য একটি ব্যাংক গ্যারান্টির আড়াই কোটি টাকার অর্ধেক অর্থাৎ এক কোটি ২৫ লাখ টাকা উৎকোচ চান এস কে সিনহা।
পরে মামলাটি তদন্তের জন্য আসে দুদকে। দীর্ঘ দেড় বছর তদন্ত করে সিনহার বিরুদ্ধে নাজমুল হুদার মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। অন্যদিকে, মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগে উল্টো ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়-১ এ মামলা দায়ের করেন সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
অভিযোগে বলা হয়, আসামি ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ রূপে নিশ্চিত না হয়ে বা মিথ্যা জেনেও বিজ্ঞ আদালত ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এবং তার নিজের বিরুদ্ধে থাকা ২০০৮ সালের মামলাটি প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন মানসে মিথ্যা ঘটনা সৃষ্টি করে শাহবাগ থানায় ওই মামলা করেছেন মর্মে দুদকের তদন্তে ওঠে আসে বলে জানান এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
২০২১ সালের অক্টোবরে নাজমুল হুদাকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক বেনজীর আহম্মেদ চার্জশিট দাখিল করেন। একই বছর ২৪ নভেম্বর ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ চার্জশিট গ্রহণ করে মামলাটি পরবর্তী বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালত- ৯ এ বদলির আদেশ দেন। ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত- ৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান মামলার অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। #