দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপ চট্টগ্রামকে হারিয়ে রুদ্ধশ্বাস জয়ে চ্যাম্পিয়ন খুলনা। শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চ ছড়ানো বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জেমকন খুলনা। আগে ব্যাট করতে নেমে খুলনা সাত উইকেটে করে ১৫৫ রান। জবাবে চট্টগ্রামের দম শেষ হয় ৬ উইকেটে ১৫০ রানে। ৭০ রানের ঝলমলে ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
খেলার ধারাভাষ্যমতে, ছয় বলে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের দরকার ১৬ রান। উইকেটে সেট দুই ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক ও সৈকত। টানটান উত্তেজনা। হলে হয়েও যেতে পারে। বল হাতে এলেন খুলনার শহিদুল ইসলাম। প্রথম দুই বলে এলো তিন রান।
পরের দুই বলেই তিনি দেখালেন চমক। স্লোয়ার দুই ফুল টস ডেলিভারিতে আউট করলেন মোসাদ্দেক ও সৈকত আলীকে। শেষ দুই বলে দরকার তখন ১৩। পঞ্চম বলে আসে এক রান। শেষ বলে ছক্কা। ৫ রানের রুদ্ধশ্বাস জয় খুলনার। উন্মত্ত উল্লম্ফনে ব্যস্ত মাহমুদুল্লাহ, মাশরাফি, ইমরুল কায়েসরা।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে রোমাঞ্চ ছড়ানো বঙ্গবন্ধু টি-২০ কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জেমকন খুলনা। আগে ব্যাট করতে নেমে খুলনা সাত উইকেটে করে ১৫৫ রান। জবাবে চট্টগ্রামের দম শেষ হয় ৬ উইকেটে ১৫০ রানে। ৭০ রানের ঝলমলে ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বরাবরের মতোই ভালো ছিল চট্টগ্রামের। সৌম্য ও লিটনের ব্যাটিং ছিল ধীর-স্থির গোছের। লিটন ছন্দে থাকলেও সৌম্য ছিলেন অনেকটা অস্থির। তার মাশুল তিনি গোনেন দ্রুতই।
ওপেনিং জুটি ভাঙে ২৬ রানে। শুভাগতর বলে বোল্ড সৌম্য। ১০ বলে এক ছক্কায় তার রান ১২। অথচ এক বল আগেই তিনি নতুন জীবন পেয়েছিলেন। তার দেয়া ক্যাচ লং অনে নিতে পারেননি ইমরুল কায়েস। নতুন জীবনের সদ্বব্যবহার করতে পারেননি সৌম্য।
কিছুক্ষণ পর দলীয় অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনও আউট। আল আমিনের বলে তিনি এলবিডব্লিউ। ৫ বলে ৭ রানে ফেরেন তিনি। ভালো খেলতে থাকা লিটন দাস এদিন বিরূপ ভাগ্যের শিকার। বোল্ট গতিতে দৌড়েও তিনি রান আউট। কৃতিত্বটা বেশি পাবেন বোলার শহিদুল ইসলাম। বল করে ফিরতি বল যেভাবে তিনি শুয়ে পড়ে ছুড়েছিলেন, তা প্রশংসনীয়।
২৩ বলে সমান ২৩ রান করেন লিটন। তার ইনিংসে ছিল মাত্র দুটি চারের মার। চতুর্থ উইকেট জুটিতে চট্টগ্রামের আশা জাগান সৈকত আলী ও শামসুর রহমান। এই জুটি দলকে টেনে নিয়ে যান ৯৬ রানা অবধি। ২১ বলে তিন চারে ২৩ রানে হাসান মাহমুদের বলে ফেরেন শামসুর।
পঞ্চম উইকেটে জুটি বাধেন দুই সৈকত; মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও সৈকত আলী। ১৬ ওভারে চট্টগ্রামের রান তখন ১০৯/৪। বলের চেয়ে রান দ্বিগুণ। শেষ চার ওভারে দরকার ৪৭ রান। ১৭তম ওভারে আসে মাত্র সাত রান। এরপর ১৮ বলে দরকার ৪০ রান। ১২ বলে ২৯। ৬ বলে ১৬। শেষ অবধি এই সমীকরণ মেলাতে পারেননি দুই সৈকত। শেষ ওভারে শহিদুল দেখান তার খেল।
চট্টগ্রামের হয়ে ৪৫ বলে চার ছক্কায় সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন সৈকত আলী। ১৪ বলে ১৯ রান করেন মোসাদ্দেক। বল হাতে খুলনার হয়ে শহিদুল দুটি, শুভাগত, আল আমিন ও হাসান মাহমুদ একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় খুলনা। নাহিদুলের ইনিংসের প্রথম বলেই ছক্কা হাকাতে গিয়ে মোসাদ্দেকের তালুবন্দী ওপেনার জহুরুল ইসলাম।
ওয়ান ডাউনে নেমে ইমরুল কায়েস শুরুর হতাশা দূর করার চেষ্টা করেন। দারুণ এক ছক্কা হাকিয়ে ভালো কিছুর আভাসও দেন। কিন্তু টিকতে পারেননি। নাহিদুলের বলে সৌম্যর হাতে ধরা অভিজ্ঞ ওপেনার। ৮ বলে ৮ রান করে যান তিনি।
বিপর্যয় রোধ করেছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও জাকির হোসেন। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ৪৩ রান অবধি। ২০ বলে দুই চার ও এক ছক্কা ২৫ রানে ফেরেন জাকির। আরিফুলের সাথে দারুণ রসায়ন ছিল মাহমুদুল্লাহর। সময়ের ব্যবধানে অল্প হলেও তা দলীয় স্কোরে প্রভাব রাখে। আরিফুলের বিদায়ের পর খুলনার হয়ে যা করার সেটি করেছেন মাহমুদুল্লাহই। ২৩ বলে দুই চারে ২১ রান করেন আরিফুল।
অধিনায়কের ভুলে রান আউট শামীম। ১২ বলে শুভাগতর সংগ্রহ ১৫ রান। জ্বলে উঠতে পারেননি মাশরাফি। যার ব্যাটে দুই চারটি ছক্কা-চার দেখতে চেয়েছিল সবাই। ৬ বলে ৫ রানে ফেরেন নড়াইল এক্সপ্রেস।
শেষ পযন্ত ব্যাট হাতে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। মোস্তাফিজের শেষ ওভারে দুই চার ও এক ছক্কা মেরে দলকে দেড় শ’ পার করেন তিনি। ৪৮ বলে ৭০ রানের দারুণ ইনিংস আসে তার ব্যাট থেকে। আটটি চার ও দুটি ছক্কা হাকান তিনি।
বল হাতে চট্টগ্রামের হয়ে নাহিদুল ও শরিফুল দুটি করে উইকেট নেন। মোসাদ্দেক ও মোস্তাফিজ পান একটি করে উইকেট।#