দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
পৃথিবীকে পরিকল্পিত ও মানুষের বাসযোগ্য হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে এবং নগর পরিকল্পনার চিন্তা-চেতনা ও গুরুত্বকে সারা বিশ্বে পরিচিতকরণের উদ্দেশ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ন্যায় এ বছরও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস উদযাপন করা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস ২০২২ উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে অদ্য ৩ নভেম্বর ২০২২ তারিখে দেশে প্রথমবারের মতো দুই দিনব্যাপী প্ল্যানিং স্টুডেন্ট কনভেনশন এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। দুই দিনব্যাপী এ কনভেনশনে পরিকল্পনা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিইউআরপি থিসিস এবং গবেষণা/স্টুডেন্ট উপস্থাপনা, তথ্যচিত্র, পোস্টার ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিশু সংবেদনশীল নগর পরিকল্পনা কর্মশালা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রভৃতি কর্মসূচী অন্তর্ভূক্ত আছে।
এবারের প্ল্যানিং স্টুডেন্ট কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে চুয়েট ক্যাম্পাসে। শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে এবং আনন্দ র্যালির মাধ্যমে কনভেনশনের দিনব্যাপী আয়োজন সকাল ৯.৩০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়। র্যালিটি প্রশাসনিক ভবন থেকে পুরকৌশল ভবন হয়ে ইউআরপি ভবনে গিয়ে শেষ হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশগ্রহণ করেন। এরপরে ইউআরপি ভবনের নিচতলায় দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের তৈরি বিভিন্ন প্রজেক্ট ও পোস্টার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়।
প্রদর্শনীর পরে চুয়েট মিলনায়তনে কনভেনশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজা সুমন এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার, এনজিপি, এনডিসি, পিএসসি এবং চুয়েটের স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান। এছাড়াও কনভেনশনে দেশের সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল/গ্রামীণ পরিকল্পনা তিনশতাধিক নবীন পরিকল্পনাবিদ, শিক্ষকসহ সেভ দ্য চিলড্রেন, ব্র্যাক-আরবান ডেভেলপমেন্ট ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনার বিকল্প নেই। টেকসই ও উদ্ভাবনী পরিকল্পনা ছাড়া কোনো উন্নয়নই যথার্থ হবে না। বর্তমান বাস্তবতায় সেই উন্নয়ন পরিবেশবান্ধবও হতে হবে। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন “গ্রাম হবে শহর” প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে স্টুডেন্ট কনভেনশন ধারণাটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। এর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি হয়, যা আমাদের নবীন পরিকল্পনাবিদদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের প্রতি মনোনিবেশ বাড়াতে সহায়ক হবে।
বিআইপি’র সভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজা সুমন বলেন, সুপরিকল্পিত ও টেকসই বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স সৃষ্টিলগ্ন থেকেই সরকার এবং পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের পরিকল্পনা শিক্ষার বিস্তৃতি ও মানোন্নয়নে বিআইপি সর্বদা বদ্ধপরিকর। নবীন পরিকল্পনাবিদদের উদ্ভাবনী গবেষণায় উৎসাহ প্রদানেও সর্বদা কাজ করে যাচ্ছে বিআইপি। এরই ধারাবাহিকতায় প্ল্যানিং স্টুডেন্ট কনভেনশন আয়োজনের শুভ সূচনা এবং এ ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতে বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চুয়েট ইউআরপি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পরিকল্পনাবিদ এ টি এম শাহজাহান এর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়েট ইউআরপি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান। এছাড়াও প্ল্যানিং স্টুডেন্ট আয়োজক উপকমিটির আহ্বায়ক এবং বিআইপি’র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম শফিক-উর রহমান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার, এনজিপি, এনডিসি, পিএসসি এবং চুয়েটের স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হাছান এবং বিআইপি’র অন্যান্য বোর্ড সদস্যগণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
এবারের প্ল্যানিং স্টুডেন্ট কনভেনশনে অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। # কাশেম