শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭ অপরাহ্ন

ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপসকে বেকায়দায় ফেলতে, শক্ত অবস্থানে দুর্নীতিবাজরা

দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করোপরেশনের ( ডিএসসিসি) মেয়র ব্যানিষ্টার শেখ ফজলে নুর তাপসকে বেকায়দায় ফেলতে দুর্নীতিবাজরা শক্ত অবস্থানে রয়েছে। ক্লিন ইমেজের মেয়রের পক্ষ থেকে বারবার কড়া নির্দেশনা এবং হুশিয়ারির পর থেমে নেই ডিএসসিসির চিহ্নিত দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

মেয়র শুরুতে ৩ জনকে বিদায় করার পর দুর্নীতিবাজরা কিছুদিন নিরব ছিল। এরপর কৌশলে তাদের অবস্থান আগের চেয়ে আরো শক্ত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের সাজানো এবং রেখে যাওয়া প্রশাসনে কতিপয় দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ফের  শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডিএসসিসিতে আগের চেয়ে এখন আরো বেড়েছে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, জালিয়াতি , ঘুষ কেলেঙ্কারি, বদলি, পদায়ন এবং অফিস আদেশ বাস্তয়ান না করার অনেক ঘটনা বেড়েছে। আর এসব ঘটনা এবং নথিপত্র বর্তমান মেয়রকে অবগিত করা হয়কি না তা নিয়েও নতুন ক্রর প্রশ্ন উঠেছে।

সম্প্রতি সচিবের দপ্তর থেকে জারি করা বেশ কয়টি জারি করা অফিস আদেশে  তারই প্রমাণ পাওয়া যায়ে। ডিএসসিসির যাবতীয় কার্যক্রশের স্বচ্ছতা ও জবাব দিহিতা নিশ্চিত করার জন্য ডিজিটাল পদ্দতি চালু করা হয়েছে। মেয়র এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সচিবের দপ্তর থেকে জারি করা গুরুত্বপূর্ণ অফিস আদেশের কপি ” ডিএসসিসির নিজস্ব ওয়েভ সাইটে” প্রকাশ করা হচ্ছে না। যদিও অফিস আদেশ জারির পর প্রতিটি কপি ‘ওয়েভ সাইটের নির্ধারিত পেইজে প্রকাশের বিধান রয়েছে।

আর এই কাজে ডিএসসিসিতে সিস্টেম এনালিষ্ট পদে মোঃ আবু তৈয়ব রোকন নামে একজন কর্মকর্তা ‘ওয়েভ সাইটটি আপডেট করা এবং অফিস আদেশের চিঠি সংশ্লিষ্ট পেইজে নিয়মিত প্রকাশের দায়িত্বে রয়েছেন। কিন্তু রহস্য কারণে সম্প্রতি বর্তমান মেয়রের নির্দেশে বেশ কয়টি চাঞ্চল্যকর আদেশ জারি কপি ডিএসসিসির ওয়েভ সাইটের নির্ধারিত পেইজে প্রকাশ করা হয়নি। শুধু তাইনয়, অফিস আদেশ জারির বিষয়টি কৌশলে চাপা রেখে গোপনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষে উল্টা কাজ করার অভিযোগ রয়েছে
                                              নিম্মে কয়েকটি ঘটনার তুলে ধরা হলো:
১, আদেশ নম্বর:…………০২.৫১৯৮.২০০৬-২৯২, তারিখ- ২১ জুন .২০২০ ইং। গত ২১ জুন জারি করা অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে; ” সম্পত্তি বিভাগের অফিস সহকারী -কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. ইসহাকের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন চাকরি বিধিমালা ২০১৯’ এর বিধি ৪৯ (খ) ও (চ) মতে যথাক্রমে অসদাচরণ এবং আত্মসাৎ, তহবিল তসরুপ ও প্রতারণার অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজুসহ তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সে মোতাবেক একই বিধিমালার বিধি ৫৫ (১) মতে তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ কার্যকর হবে। ২৪ জুন পর্যন্ত চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়া এই কর্মচারীর কপিটি ওয়েভ সাইটে আপডেট নেই।

২, অফিস আদেশ নম্বর; ………… ০২.১৯৩.২০১৯-২২৯, তারিখ- ২০/০৫/২০২০ ইং। অফিস আদেশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী (পুর.) আ.হ.ম.আব্দুল্লাহ হারুনকে ওএসডি করে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।

একই আদেশে অপর সহকারি প্রকৌশলী (পুর) পিএনডি মো. মফিজুর রহমান খানকে অতিরিক্ত মার্কেট নির্মাণ সেল এবং নির্বাহী প্রকৌশলী (অ. দ.) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল্ড ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

কিন্তু এই অফিস আদেশের কপি ডিএসসিসির ওয়েভ সাইটে প্রকাশ করা হয়নি। আর সহকারী প্রকৌশলী (পুর.) আ.হ.ম.আব্দুল্লাহ হারুন ওই ওএসডির আদেশ অমান্য করে নিয়মিত তার দপ্তরে অফিস করছেন। তিনি ওএসডির আদেশ চ্যলেঞ্জ করে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছেন।

আর এই বিষয়টি নিয়ে অনলাইন নিউজ পোটাল দূরবীণ নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে গত ১ জুন ” মেয়র তাপসকে চ্যালেঞ্জ; ওএসডির পর এখনো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের দপ্তর প্রকৌশলী হারুনের নিয়ন্ত্রনে : শীরো নামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশি হয়। এখনো তিনি তার দপ্তর নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন।

ছবিতে-এই সেই অফিস আদেশের কপি, যাহা -বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী (পুর.) আ.হ.ম.আব্দুল্লাহ হারুনকে ওএসডি করে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছিল।

৩, অফিস আদেশ; ……… ০২. ২৮৮৯.২০০২/২৮২ ৯১৫), তারিখ- ১৭/০৬ ২০২০ ইং। আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, সম্পত্তি বিভাগের জরুরি এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র উপস্থাপন ও রেকর্ড রক্ষণা বেক্ষণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে নিম্মোক্ত কর্মচারীদেরকে বদলি করা হলো।

(১) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উচ্চমান সহকারী কাম- হিসাব রক্ষক মো. হাবিবুর রহমানকে সম্পত্তি বিভাগে সংযুক্ত করা হলো। একই আদেশে (২) সম্পত্তি বিভাগের অফিস সহকারী কাম- কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মাহবুবা খানমকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সংযুক্ত করা হয়েছে। সংযুক্ত কর্মচারীরা তাদের মূল কর্মস্থল হতে বেতন ভাতা প্রাপ্য হবেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।

এদিকে আরো অভিযোগ রয়েছে, এই আদেশের কপিটিও ডিএসসিসির ওয়েভ সাইটে নেই। শুধু তাইনয়, গত ১৭ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত আদেশটি কার্যকর করা হয়নি। সম্পত্তি বিভাগের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মাহবুবা খানম বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ যোগদান করতে গেলে তাকে গ্রহণ না করে, ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে ।

প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ হারুনের নিয়ন্ত্রিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ তাকে গ্রহণ করবেন না এবং ওই দপ্তর থেকে উচ্চমান সহকারী কাম- হিসাব রক্ষক মো. হাবিবুর রহমানকেও সম্পত্তি বিভাগে আসতে দেওয়া হচ্ছে না । এই বিষয়টি নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে, কারণ অন্য কোনো দপ্তরের কর্মচারী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ পোর্স্টিং হলে তাদের অনেক গোপন তথ্য ফাঁস হবার আশঙ্কা রয়েছে। যারফলে ওই দপ্তরে কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। তবে তদন্ত হলে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে সাধারণ কর্মচারীদের অভিমত।

৪, অফিস আদেশ নম্বর,………..০৩.২৫০৫.২০০৮-১৮৩ (৩০), তারিখ- ১৭ /০৬ ২০২০ ইং। আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, অঞ্চল-৫ এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের দৈনিক মজুরি ভিত্তিক মাষ্টাররোল পরিচ্ছন্নতা কর্মী । বর্তমানে প্রকৌশল বিভাগ, অঞ্চল-১ এ অফিস সহায়ক হিসেবে সংযুক্ত রাশিদা বেগমকে প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার দপ্তরে অফিস সহায়ক (এমএল এস এস) পদে সংযুক্ত করা হলো। তিনি তার মূল বিভাগ হতে দৈনিক মজুরি প্রাপ্য হবেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ক্রমে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো।

তবে অবাক লাগে  পরিচ্ছন্নতা বিভাগে মাষ্টাররোলের  একজন কর্মচারীর বদলির আদেশের কপিটি ডিএসসিসির ওয়েভ সাইটে সাথে সাথে প্রকাশ করা হয়েছে। শুধু তাইনয, এই রাশিদা বেগম  চাকরির অধিকাংশ সময় প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার দপ্তরে কাজ করেছে। তাকে অন্য কোনো দপ্তরে বদলি করলেও ৭/৮ মাসের মাথায় তিনি এই দপ্তরে ফিরে আসেন। তিনি অন্যদপ্তরে বেশিদিন থাকেন না। তার বিষয়টিকে এতা গুরুত্ব দেন সচিবের দপ্তর।

অপরদিকে সম্পডত্তি বিভাগের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষমতা অপব্যবহারের দায়ে বরখাস্ত হওয়া তৃতীয় শ্রেনির কর্মচারী এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ হারুনকে ওএসডির করা অফিস আদেশের কপিটি ডিএসসিসির ওয়েভ সাইটে নেই। কেনো নেই তা নিয়ে নানা প্রশ্ন সাধারণ কর্মচারীদের।

এসব অভিযোগের বিষয়ে ডিএসসিসির সিস্টেম এনালিষ্ট মোঃ আবু তৈয়ব রোকন বলেন, সচিবের দপ্তর থেকে জারি করা অফিস আদেশের সব কপি তাকে দেওয়া হয় না। যেগুলো তাকে দেওয়া হয়, তিনি ওইসব কপি ওয়েভ সাইটে প্রকাশ করেন। এখানে তার কোনো গাফলিত নেই। # কাশেম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৩ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০০ অপরাহ্ণ
  • ৪:৩১ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৮ অপরাহ্ণ
  • ৭:৪৭ অপরাহ্ণ
  • ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12