বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন

করোনাসহ সংক্রামণ ব্যাধি প্রতিরোধে বি.আই.পি’র ১০টি সুপারিশ

দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে আপনার সকলেই অবগত আছেন। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসসহ সংক্রামণ ব্যাধি প্রতিরোধে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি)’র পক্ষ থেকে ১০টি সুপারিশ রাখা হয়েছে।
রোববার (২২ মার্চ) ভিআইপি’র সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড.আদিল মুহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বেশ কিছু সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত সকলের প্রতি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর পক্ষ থেকে রইল গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসসহ সংক্রামণ ব্যাধি মোকাবেলায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বি.আই.পি) জনস্বাস্থ্য ও জনস্বার্থ রক্ষার্থে নীতি-নির্ধারণী মহল সহ সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য নিম্নের দশ দফা সুপারিশসমূহ উপস্থাপন করছেঃ
১. নগর এলাকায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সংখ্যা জরুরী ভিত্তিতে বাড়ানো প্রয়োজন, যেখানে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পাবে। এ সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগের প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রয়োজন ।এজন্যে জরুরী ভিত্তিতে স্বাস্থ্য তহবিল ঘোষণা করা একান্ত প্রয়োজন।

২. করোনাভাইরাস আতংকে অনেক সাধারণ রোগী প্রাথমিক ও জরুরী স্বাস্থ্যসেবা থেকে যেন বঞ্চিত না হয় সে ব্যাপারে সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল ও সেবাকেন্দ্রসমূহকে যথাযথ নির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।

৩. ডেংগুর মৌসুম সমাগত হওয়াতে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের সাথে সাথে ডেংগু প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে যেন শ্লথগতি পরিলক্ষিত না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

৪. অধিক ঘনবসতিপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসচেতনতা তুলনামূলকভাবে কম হওয়াতে বস্তিসহ নিম্ন আয়ের আবাসন এলাকা হতে রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে পরবার সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল। ফলে বস্তিসহ নিম্ন আয়ের আবাসন এলাকায় বিশেষ নজরদারি বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন।
এসব এলাকার জন্য নজরদারি/তদারকি দল গঠন করে জ্বর, সর্দি-কাশি প্রভৃতি উপসর্গ আছে এমন লোকদেরকে আলাদা করে সরকারের বিশেষ কোয়ারেন্টাইন এলাকাতে প্রতিস্থাপন করা আশু দরকার।
সন্দেহভাজন রোগীদের আলাদা করা, তাদের পরীক্ষা করা এবং শনাক্ত করার মাধ্যমে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না হলে অধিক জনসংখ্যা ও ঘনবসতিপূর্ণ এসকল এলাকা হতে করোনা এলাকা মহামারী হতে অতিদ্রুততার সাথে শহরের অন্যান্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কাজে সরকার এনজিও কর্মীসহ নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর সেবা নিয়ে কাজ করে এরূপ প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিতে পারে।

৫. বিশ্বের অনেক দেশই করোনা মহামারী মোকাবিলায় সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে অর্থনৈতিক সাহায্য ও সহযোগিতার অংগীকার করেছেন। আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ অনানুষ্ঠানিক ও বেসরকারী খাতের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত বিধায় অর্থনৈতিক সাহায্য ও সহযোগিতার সরকারী ঘোষণা ও নির্দেশনা জনমনে স্বস্তি এনে দিতে পারে এবং এতদসংক্রান্ত আতংক প্রশমনে সহায়ক হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে সরকারের জরুরী সহায়তা তহবিল ঘোষণা করা প্রয়োজন। একইসাথে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের সহায়তার ব্যাপ্তিকে গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি শহরের নিম্ন আয়ের লোকদের কিভাবে অন্তর্ভূক্ত করা যায় তার পরিকল্পনা প্রস্তুত করা প্রয়োজন।

৬. করোনাভাইরাস মোকাবেলায় শহর ও গ্রামাঞ্চলে এলাকাভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী দল গঠন করার মাধ্যমে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। একইসাথে স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য উপযুক্ত প্রতিরোধমূলক সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে ।

৭. করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য সামনের দিনগূলোতে আমাদের শহর এলাকার পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকাসমূহকে লকডাউন তথা বিচ্ছিন্নকরণ করা প্রয়োজন হতে পারে। এক্ষেত্রে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করবার মাধ্যমে কমিউনিটিভিত্তিক দল গঠন করা প্রয়োজন যারা জনপ্রতিনিধি, জনপ্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে এবং একইসাথে সাধারণ জনগণকে সার্বিক পরিস্থিতি অবগত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করবে। এ ধরনের উদ্যোগে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত না করা হলে বিভিন্ন এলাকাকে লকডাউন করবার প্রেক্ষিতে অনেক ধরনের গুজবের বিস্তার ঘটতে পারে এবং অনেক অনাকাংখিত ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে, যা সামলানো সরকারের জন্য কঠিন হতে পারে।

৮. বর্তমান প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ধরনের খাবার, ঔষধ সহ দৈনন্দিন অতি আবশ্যক দ্রব্যাদির পর্যাপ্ত জোগান ও প্রবাহ নিশ্চিত করবার সকল ধরনের উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। একই সাথে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে বিশেষভাবে আশ্বস্ত করা প্রয়োজন। নতুবা করোনা আতংকে সাধারণ মানুষের খাদ্য ও দ্রব্যাদি মজুদ করবার প্রেক্ষিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি ঘটবে যার অন্যতম ভুক্তভোগী হবে নিম্ন আয়ের প্রান্তিক মানুষেরা।

৯. তুলনামূলকভাবে বয়স্ক ও প্রবীণ লোকদের করোনাভাইরাসে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশী হওয়াতে বয়স্ক লোকদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ নির্দেশনা প্রয়োজন। একইসাথে প্রবীণ লোকদের জরূরী সহায়তা ও সেবাপ্রাপ্তির জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে সম্পৃক্ত করে কমিউনিটিভিত্তিক বিশেষ সেবা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

১০. করোনাভাইরাসসহ সংক্রামণ ব্যাধি প্রশমনসহ জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে এবং আসন্ন দূর্যোগ মোকাবেলায় এতদসংশ্লিষ্ট সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশগ্রহণে এবং পেশাজীবিদেরকে সম্পৃক্ত করবার মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় পর্যায়ের কমিটি করবার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। একই সাথে সাথে স্থানীয় পর্যায়ে তা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে এই আশু দূর্যোগ মোকাবেলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ করবার মাধ্যমেই জনস্বাস্থ্য ও জনস্বার্থ নিশ্চিত করা সম্ভব।

বিআইপি আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করছে, বৈশ্বিক এই মহামারী থেকে বিশ্ববাসী খুব দ্রুত মুক্তি পাবে এবং আমরা সকলেই শীঘ্রই আমাদের প্রাত্যহিক কর্মকান্ড ও স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করতে পারব। # কাশেম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ
  • ১২:০১ অপরাহ্ণ
  • ৪:৩০ অপরাহ্ণ
  • ৬:২৬ অপরাহ্ণ
  • ৭:৪৩ অপরাহ্ণ
  • ৫:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12