দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, পরিণত মানুষের চিন্ত-চেতনা ও মানসিকতার পরিবর্তন করা সত্যিই জটিল। কারণ অনেকে মানুষ ঠান্ড মাথায় নানা অনিয়ম, দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হন এবং এসব অপরাধের পক্ষে অনেক যুক্তি দাঁড় করান।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর অক্সফাম ইন বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয়ে “ প্রিভেন্টিং করাপশন টু এস্টাবলিশ গভার্নেন্স : রোল অব পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনাপরশীপ ” শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অক্সফাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা কান্ট্রি ডিরেক্টর ও স্বাধীনতা পদক প্রাপ্ত জুলিয়ান ফ্রান্সিস ওবিই , অক্সফাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. দীপঙ্কর দত্ত, নাট্য অভিনেতা আজিজুল হাকিম, শহীদুজ্জামান সেলিম, জাহাঙ্গীর নগর বিশাববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শারমিন্দ নিলরময় ডালিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর সালমা, দুদকের প্রতিরোধ অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম সোহেল প্রমুখ।
তিনি বলেন দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পর অনেক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। দুদকের মামলার আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়। ধারনা ছিল এই গ্রেফতারের ফলে দুর্নীতি হয়তো কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমে আসবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে দুর্নীতির প্রকোপ কমেনি। একারণেই কখনও কখনও কিছুটা হলেও হতাশা অনুভব করেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতিবাজদের নিয়ন্ত্রণে কমিশন দমনমূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মের মাঝে নৈতিকমূল্যবোধ জাগিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ করার কৌশল গ্রহণ করেছে। এই কৌশলের অংশ হিসেবেই দেশের ২৬ হাজার ২১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের নৈতিকমূল্যবোধ বিকাশে বিতর্ক প্রতিযোগিতা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ কাজে অক্সফামের সহযোগিতা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের অন্যতম উদাহরণ। কমিশনের প্রতিরোধমূলক কার্যকমের অধিকাংশ অর্থই এই তরুণদের পিছনে ব্যয় করা হচ্ছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এর মাধ্যমে যদি ১০ হাজার নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ সৃষ্টি করা যায় , তা হবে এ দেশের এক অমূল্য সম্পদ।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বিতর্ক ও রচনা প্রতিযোগিতা, কালচারাল শোসহ এজাতীয় কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণ শক্ষার্থীদের মননে উত্তম চারিত্রিক গুণাবলী গ্রোথিত করা চেষ্টার করা হচ্ছে। এই কর্ম প্রয়াসে সকলের সমন্বিত অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করি।
তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, শিক্ষার সৌন্দর্য হলো কোনটি সঠিক এবং কোনটি ভুল তা নির্ণয় করার সক্ষমতা অর্জন করা ।
তিনি বলেন, দুর্নীতি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। কিন্তু দুর্নীতির কোনো সার্বজনীন সংজ্ঞা পাওয়া যায় না। অনেকে মনে করেন বিবেকের বাইরে কিছু করাই দুর্নীতি । লোভই মানুষকে বিবেকের বাইরে নিয়ে যায়।
সম্পদ বানানোর এই লোভকে নিবারণ করতে হবে। কথায় আছে , “দেহ খায় পোকে, আর সম্পদ খায় লোকে।” তাই আমার অনুরোধ সম্পদের মোহে বিবেকের বাইরে যেয়ে কেউ কিছু করবেন না। এ সম্পদ আপনি হয়তো ভোগ করতেই পারবেন না ।
এসময় দুদকের আয়োজনে চলমান বিতর্ক প্রতিযোগিতা নিয়ে অক্সফামের স্বেচ্ছাসেবীরা একটি তথ্য চিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে জানান, ‘দেশের ৪৯৩টি উপজেলার ২৬ হাজার ২১৩ টি বিদ্যালয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার প্রথম ধাপ সম্পন্ন হয়েছে। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার ১ লক্ষ ৪০ হাজার ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে এবং প্রায় ৩ লক্ষ শিক্ষক এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সম্পৃক্ত হয়েছেন। # কাশেম
Attachments area