দূরবীন নিউজ প্রতিবেদক :
স্কুলের গতানুগতিক পাঠাক্রম ও বিষয়বস্তু পরিবর্তন করে জীবনমুখী ও নাগরিক বিষয়ক শিক্ষা অন্তর্ভুক্তির তাগিদ দিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দদুদপুরে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় রেড কার্পেট ৩৬৫ আয়োজিত ৩ দিন ব্যাপী “বাংলাদেশ স্মার্ট সিটি কনফারেন্স এন্ড এক্সপো-২০১৯” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উদ্বোধন শেষে মেয়র বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আমেরিকার ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান, ভারতের ইনফোসেক ফাইন্ডেশনের চেয়ারম্যান সুশোভন মুখার্জি, সাইবার সিকিউরিটি মালয়েশিয়ার সিইও ড. হাজী আমিরুদ্দিন বিন আব্দুল ওয়াহাব, অ্যামটব এর মহাসচিব ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল(অব) এস এম ফরহাদ, ওয়েল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও সৈয়দ নুরুল ইসলাম, ডিএনসিসির সিইও আব্দুল হাই, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগ্রেডিয়ার মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর মঞ্জুর হোসেন, এবং সচিব রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া।
ওময়র বলেন, গতানুগতিক শিক্ষায় যদি আমাদের সন্তানদেরকে আমরা নগর সমাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে না পারি তবে সে শিক্ষা গুরুত্ব হারায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পদার্পণ করতে যাচ্ছি। সরকার প্রতিনিয়ত দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়ণে কাজ করে যাচ্ছে। নাগরিকদেরকেও সমানতালে এগিয়ে যেতে হবে।
তবে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দেশের সামগ্রিক জিডিপির ৩০ ভাগেরও বেশি আসে শুধু এই ঢাকা থেকে। তাই এই ঢাকার উপর চাপও স্বাভাবিকভাবেই বেশি। প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রতিদিন এই ঢাকাকে মুখরিত করে। আর এরই ফলে বর্জ্য উৎপাদনও বেড়ে যায় কয়েকগুন।
আমাদের এই অবস্থা থেকে উত্তোরণ করতে হবে। আজকের এই আয়োজনের লক্ষ্য হলো ঢাকাকে স্মার্ট সিটি হিসাবে গড়ে তোলা। তিনি বলেন যদি ভারতে আজমীর শহর স্মার্ট সিটি হিসাবে গড়ে তোলা যায়, এমনকি কলকাতা শহর শিঘ্রই স্মার্ট সিটি হতে যাচ্ছে, সেখানে আমরা কেন পারবো না?
একটি স্মার্ট ও আধুনিক শহরের অন্যতম বৈশিষ্ট হলো সেখানে বর্জ্য উৎপাদন হবে কম, এবং সে বর্জ্য অনেকাংশেই পুন:ব্যবহার করা হবে। কিন্তু নাগরিকদের নাগরিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারলে এই বর্জ্যব্যবস্থাপানা নিশ্চিত করা যাবে না।
আমরা ডিএনসিসি বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে বর্জ্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে চাই, ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে চাই। কিন্তু স্মার্ট সিটির পূর্বশর্ত হলো স্মার্ট নাগরিক। আমরা আশা করছি শিঘ্রই আমাদের নাগরিকদের সম্ভাব্য সকল সেবা আমরা অনলাইনে দিতে পারবো।
একটি মোবাইল এ্যাপ সকল ডিএনসিসির সকল সেবা নিয়ে আসবে নাগরিকদের হাতের মুঠোয়। নিজ বাসায় বসে সে তার বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে পারবে, দোকানের ট্যাক্স দিতে পারবে, মশক নিধনের জন্য জানাতে পারবে, বর্জ্য ও আবর্জনা পরিস্কারের জন্য বলতে পারবে, রাস্তার দুরাবস্থা জানাতে পারবে, জন্মসনদ, মৃত্যুসনদ নিতে পারবে, অভিযোগ ও পরামর্শ জানাতে পারবে।
আমরা আশা করছি আগামি জানুয়ারিতেই ৫০ শতাংশ হোল্ডিং ট্যাক্স অনলাইনে আদায় করতে পারবো। আমরা ইতোমধ্যেই ওয়ান স্টপ জাতীয় কল সেন্টার ৩৩৩ এর সাথে সংযুক্ত হয়েছি।
স্মার্ট সিটি কনসেপ্ট আমরা গ্রহণ করেছি, এখন দরকার নাগরিক শিক্ষা নিশ্চিত করা। আধুনিক এই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে একযোগে সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশন কাজ করে যাচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদক্ষ নেতৃত্ব শিঘ্রই আমরা মেট্রোরেল, বাস র্যাপিড ট্রান্জিটসহ অন্যান্য আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা পেতে যাচ্ছি, এতে করে দৈনন্দিন কাজে নাগরিকদের সময় বাঁচবে, টাকা বাঁচবে, শ্রম বাঁচবে।
তাই আসুন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শিখি, নাগরিক দায়িত্ব শিখি, একসাথে কাজ করি। নিশ্চই আমরা একটি উন্নত আধুনিক স্মার্ট সিটি হিসাবে ঢাকাকে গড়ে তুলতে পারবো। #