দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক
# ভিডিও দেখে হাউমাউ কওে কাঁদলেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা
দেশ বিদেশে বহুল আলোচিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে গতবছর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে পুলিশের গুলিতে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সূচনা বক্তব্য গ্রহণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সূচনা বক্তব্য শেষে ট্রাইব্যুনালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যাকাণ্ডের দুটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। ওই সময় ছেলেকে প্রকাশ্যে গুলি করার দৃশ্য দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। তিনি ছেলে হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেবেন বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন সূত্র।
বুধবার (২৭ আগস্ট) ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল ওই মামলায় সূচনা বক্তব্য গ্রহণ করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই বিচারক হলেন, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
এই সূচনা বক্তব্যে মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বেরোবি) সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।আসামিদের বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) ধার্য করেছেন উক্ত ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মইনুল করিম, প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার পালোয়ান, তারেক আবদুল্লাহসহ অন্যরা।
বুধবার সকালে এ মামলার ৬ আসামিকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। তারা হলেন—এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ।
এর আগে, ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়ে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। তবে এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৬ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
গত ৩০ জুলাই পলাতক আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত চার আইনজীবী। এর মধ্যে পাঁচজনের হয়ে লড়েন আইনজীবী সুজাত মিয়া। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মামুনুর রশীদ। এছাড়া শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলাম। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, মঈনুল করিম ও আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
গত ২৯ জুলাই তিন আসামির পক্ষে শুনানি হয়। এর মধ্যে শরিফুলের হয়ে লড়েন আইনজীবী আমিনুল গণি টিটো। কনস্টেবল সুজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু ও ইমরানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সালাহউদ্দিন রিগ্যান। শুনানিতে তিনজনেরই অব্যাহতি চান আইনজীবীরা।
২৮ জুলাই এ মামলার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ওই দিন আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি এ মামলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়া হয় ৩০ জুন। আর ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা।
#