রাজধানীর মিরপুরে বহুল আলোচিত ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে মানব সেবার নামে ভয়ঙ্কর প্রতারণা, মানুসের কিডনীসহ অঙ্গ বিক্রি, অবৈধভাবে লাশ দাফন, মানবপাচার, টর্চার সেল, আয়ের উৎস- সবকিছুই মামলায় রাখা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
বুধবার (১ মে) রাতে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তারের পর রাজধানীর মিন্টো রোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান তিনি।
ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, মিল্টন সমাদ্দারকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তার বাড়ি বরিশালের উজিরপুরে। বাবাকে পেটানোর কারণে এলাকাবাসী তাকে এলাকা ছাড়া করে।
তিনি বলেন, মিঠু হালদার নামে এক নার্সকে বিয়ে করেন। এরপরে তার স্বপ্নে আসল চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার স্থাপন করবেন। স্ত্রীকে দিয়ে এমন একটি প্রতিষ্ঠান খুলে সেবা দিতে শুরু করেন তিনি। গণমাধ্যমে এসেছে তার একটি অপারেশন থিয়েটারের তথ্য। যেটার কোনো লাইসেন্স নেই।
ডিবি প্রধান বলেন, তার বিরুদ্ধে রাতে মরদেহ দাফনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে ৯০০ মরদেহ দাফন করেছেন বলে মিডিয়ায় এসেছে। এর মধ্যে ৮৩৫টি মরদেহের কোনো ডকুমেন্ট তিনি দেখাতে পারেননি।
এর আগে বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা ৭টায় রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মিল্টন সমাদ্দারের বিভিন্ন অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। মুখ খুলতে থাকেন ভুক্তভোগীরা। যদিও কয়েকটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন মিল্টন সমাদ্দার।
অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় তিনি গড়ে তুলেছেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ নামে একটি বৃদ্ধাশ্রম। রাস্তা থেকে অসুস্থ ও ভবঘুরেদের কুড়িয়ে ওই বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় দেন, করেন সেবা-শুশ্রূষা। জনসেবামূলক এসব কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন সরকারি-বেসরকারি নানা পুরস্কারও। তবে ভালো কাজ যতটুকু করেছেন, প্রচার করেছেন তার চেয়েও কয়েক গুণ।