দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি)মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ” অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি আমিন বাজার ল্যান্ডফিলে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইনসিনারেশন প্লান্ট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এই ইনসিনারেশন প্লান্ট থেকে দৈনিক ৪২.৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ডিএনসিসির এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ৩২০০-৩৬০০ টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়৷ এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাসা-বাড়ির মিক্সড বর্জ্যকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে শক্তিতে রুপান্তর করা হবে৷ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে বর্জ্য সম্পদে রুপান্তরিত হবে। পাশাপাশি পরিবেশে কার্বন নিঃসরণের পরিমান হ্রাসকরণ ও বর্জ্যকে পরিবেশ বান্ধব ও মান সম্মত উপায়ে ব্যবস্থাকরণ সম্ভব হবে।’
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর ) দুপুরে ঢাকার বনানীতে শেরাটন হোটেলে ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘গুলশান, বনানী ও বারিধারা অনেকটা ম্যানহাটন শহরের মতোই অভিজাত ও ব্যয়বহুল। কিন্তু এটি অত্যন্ত দুঃখজনক এসব এলাকায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি বানালেও সুয়ারেজের বøাক ওয়াটারের সংযোগ আমাদের সারফেস ড্রেনে দিয়ে রেখেছে। অভিজাত এলাকায় পয়ঃবর্জ্যের অবৈধ সংযোগ দুঃখজনক। অল্প টাকা খরচ করে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট করেনি।’
‘ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে ও পরিবেশ রক্ষায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন খালগুলোতে নৌপথ চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, হাতিরঝিলের আদলে মিরপুরের রূপনগর খাল দিয়ে তুরাগ নদী পর্যন্ত নৌপথ চালু করা হবে। রূপনগর খালে মোট ১১টি ব্রিজ রয়েছে সেগুলোকে আর্চ ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে এই পথে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। এই শহরকে বাঁচাতে ন্যাচার বেজড সলিউশন করতে হবে। নৌপথ চালুর মাধ্যমে যানজট যেমন কমবে সেই সাথে পরিবেশ দূষণ রোধ করা সম্ভব হবে।’
মেয়র বলেন, ‘আমরা চাই একটি সুন্দর শহর, একটি দূষণমুক্ত শহর। আমরা চাই শহরের খালগুলো হবে দূষণমুক্ত। এজন্য আমাদের সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে, দায়িত্ব পালন করতে হবে। বাসা-বাড়ির পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সারফেস ড্রেন (স্ট্রম ড্রেন) অথবা খালে দেওয়া যাবে না। পয়ঃবর্জ্যের লাইন খালে গিয়ে প্রতিনিয়ত খালকে দূষণ করছে। দূষণের ফলে খালে মাছের চাষ না হয়ে সেখানে মশার চাষ হচ্ছে। সেটি আর হতে দেয়া যাবে না। গ্রামের বাড়িতে সবাই সোক ওয়েলের মাধ্যমে নিজস্ব ব্যবস্থায় পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করলেও শহরে সবাই সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে। অথচ অল্প খরচে ভবনের বেজমেন্টে অনসাইটে স্যানিটেশন ব্যবস্থা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, বায়ু দূষণ রোধে করণীয় বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘বায়ু দূষণ রোধে সিটি কর্পোরেশন থেকে ব্রাউজার দিয়ে পানি ছিটানো হয়। নির্মাণকাজের সময় সৃষ্ট ধুলা যেন বায়ু দূষণ না করে সে বিষয়ে আমরা ডেভেলপার কোম্পানিগুলোর সাথে সভা করেছি। পাশাপাশি সারফেস ড্রেনে দেওয়া পয়ঃবর্জ্যের সংযোগের ফলেও পানি দূষণের সাথে সাথে বায়ু দূষণও হচ্ছে। তাই অনসাইটে স্যানিটেশন ব্যবস্থা জরুরি। আমরা পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষরোপণে গুরুত্বারোপ করেছি। ইলেকট্রিক স্কুল বাস চালুর পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।’
শক্তি ফাউন্ডেশনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান আহমেদের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. এস এম মনজুরুল হান্নান খান, ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ইকোনমিক অফিসার এমি চ্যাশ, সুইডেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ড্যানিয়েল নোভাগ, বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র নগর পরিবহন বিশেষজ্ঞ ক্যাটালিনা ওচুয়া এবং আইসিডিডিআরবি’র প্রজেক্ট কোর্ডিনেটর ডাঃ মোঃ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।#কাশেম