দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সাজা প্রাপ্ত আসামী তারেক রহমানের বক্তব্য ইউটিউব, ফেসবুকসহ সব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে অবিলম্বে ব্লক, অপসারণ বা সরিয়ে ফেলতে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি অথরিটি (বিটিআরসি)কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বে এক রিট আবেদনের শুনানি গ্রহণ শেষে এ আদেশ দেন। এ আদেশের সময় বিএনপির আইনজীবীরা হট্টগোল করলে বিচারকরা এজলাস ছেড়ে চলে যান।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম, সাঈদ আহমেদ রাজা ও সানজিদা খানম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আদালতের বাইরে গণমাধ্যমকে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী কামরুল ইসলাম বলেন, নয়াপল্টনের জনসভায় তারেক রহমানের বক্তব্য মাইকে প্রচার করা হয়। ইদানিং খুব বেশি রকমভাবে প্রচারিত হচ্ছে আদালতের আদেশ ভায়েলেট করে। যার জন্য আমরা বিটিআরসির প্রতি একটা নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেছি। আদালত আবেদনটি অ্যালাউ করেছেন। বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা দিতে যেন ইউটিউব, সামাজিক সব মাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য, বিবৃতি, ভিডিও-অডিও প্রচার বন্ধে পদক্ষেপ নেয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওরা অযাচিতভাবে কোর্টের কার্যকালাপকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তারা কোনোভাবে পার্টি না (মামলায় পক্ষভুক্ত না)। তারা আজ ন্যাক্কারজনক কাজ করছে। গত ১৩ আগস্ট তারেক রহমানের সংশোধিত ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে বলেছিলেন হাইকোর্ট। ওই নোটিশ জারির পর অনলাইন থেকে তারেক রহমানের বক্তব্য সরাতে আবেদন করেন রিট আবেদনকারী। এরপর সোমবার আদেশ দেন হাইকোর্ট।
জানা যায়, রুল শুনানির জন্য সেকশন থেকে যে নোটিশ পাঠানো হয় সেখানে তারেক রহমানের ঠিকানা ভুল লেখা হয়েছে। রোড নম্বরের জায়গায় রুম নম্বর হয়েছে। এরপর সংশোধিত ঠিকানা জমা দেন রিটকারীরা।
এর আগে ২০১৫ সালের ৬ জানুয়ারি আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকী লিনা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। রিটে কোনো পত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসে তারেক রহমানের কোনো বক্তব্য প্রকাশ, প্রচার, সম্প্রচার, পুনঃউৎপাদন না করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তথ্য সচিবের প্রতি নির্দেশনা চেয়েছিলেন।
রিটে বলা হয়, তারেক একজন ফেরারি আসামি। তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করে ও বেআইনিভাবে বক্তব্য দিচ্ছেন। একজন ফেরারি আসামির বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচার হতে পারে না। যাকে আদালত খুঁজে পাচ্ছেন না, তার বক্তব্য প্রচারযোগ্য নয়।
পরদিন রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বে তারেকের বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রুল জারি করেন।
রুলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। তথ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, বিটিভির মহাপরিচালক, বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে আদালতে ওই দিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন (প্রয়াত), অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম (বর্তমানে মন্ত্রী), অ্যাডভোকেট এস এম মুনীর (বর্তমানে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল), অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম (তৎকালীন এমপি)। সম্প্রতি এ রুল শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয় রিটকারী পক্ষ। #