দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
ভয়ঙ্কর এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ধানমন্ডির ১৫/এ এলাকায় আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক এবং ধনিয়ায় বিশ্বাস বিল্ডার্সের নির্মাণাধীন ভবনসহ ১৬টি স্থাপনাকে ৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৯ ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরীতে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ও ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে পৃথক ১৬ মামলা দায়ের করে মোট ৩ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন।
মঙ্গলবার (১১ জুলাই) ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন ধানমন্ডি ১৫/এ, দেওয়ানবাগ, মায়াকানন, নবাবগঞ্জ, জিন্দাবাহার প্রথম লেন, বংশাল, অভয় দাস লেন, আর কে মিশন রোড, মান্ডা, উত্তর যাত্রাবাড়ী ও দক্ষিণ ধনিয়া এলাকায় এসব অভিযান পরিচালনা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের।
তিনি জানান,এক নম্বর অ লে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মঞ্জুরুল হক ধানমন্ডি ১৫/এ এলাকায় ৪২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের নির্মাণাধীন ভবনসহ ৫টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পান। ভ্রাম্যমান আদালত এ সময় আনোয়ার ল্যান্ডমার্কের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. মাহবুবকে ১টি মামলায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন এবং বাকী ৪ স্থাপনায় আরও ৫২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। সবমিলিয়ে অঞ্চল-১ পরিচালিত আদালত ৫ মামলায় ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
দুই নম্বর অঞ্চলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম আর সেলিম শাহনেওয়াজ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মায়াকানন এলাকায় ২৫টি এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ানবাগ এলাকায় ১৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন কালে কোনো স্থাপনায় মশার লার্ভা পাননি। এছাড়াও ২ নম্বর অ লের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মায়াকানন এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহরিয়ার হক ২৩টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং ১টি স্থাপনায় ওয়াসার মিটারের নিচে মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
তিন নম্বর অঞ্চলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তায়েব-উর-রহমান ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের নবাবগঞ্জ এলাকায় ১৮টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন কালে ২টি স্থাপনায় লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ৯০ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
চার নম্বর অঞ্চলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানার আদালত বংশালের জিন্দাবাহার ১ম লেনে ১৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা কালে ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ৬ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
পাঁচ নম্বর অঞ্চলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সফি উল্লাহ অভয়দাস লেন ও আর কে মিশন রোড এলাকায় ২২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা কালে ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
সাত নম্বর অঞ্চলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাওসীফ রহমান ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের মান্ডা এলাকায় ৩০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা কালে ১টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
নয় নম্বর অঞ্চলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ৪৮টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা কালে ১টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
দশ নম্বর অঞ্চলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ধনিয়া এলাকায় ২৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা কালে বিশ্বাস বিল্ডার্সের নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন। এছাড়াও আরেকটি ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ২০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।
জনসংযোগ কর্মকর্তা আরও জানা, ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৯৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নগীর বিভিন্ন লাকায় অভিযানকালে ‘স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সমন্বয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে আঙ্গিনা ও চারপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন বোধে সেখানে বিøসিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে।
এরপর সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব অভিযানে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যতীত স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকবৃন্দ অংশগ্রহণ করছেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিতরণসহ নানাবিধ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা, প্রয়োজন অনুযায়ী ব্লিচিং পাউডার ছিটানো এবং সবশেষে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। # কাশেম