দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ ছাড়া মিথ্যে মামলা করায় বাদী ঢাকা জেলার শ্রম পরিদর্শককে শোকজ করেছেন বিচারিক আদালত।
মঙ্গলবার (৩০ মে) শ্রম জজ আদালতের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী সই করা আদেশের কপি হাতে পান বিবাদী পক্ষের আইনজীবী। আগামী ৬ জুন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ওইদিন এ মিথ্যা মামলার দায়ে আদালত বাদীকে উপযুক্ত তথ্য উপাত্ত¡ হাজির করার কথা রয়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬, ধারা ৩০৩(৫) এবং ৩০৭ মোতাবেক ২০২১ সালে প্রথম শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) মো. মাসুদ আলম বাদী হয়ে এ মামলা করেন। ওই মামলায় গুলশানের একটি হোটেলে শ্রম আইনের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে এবং সাঈদ খোকনকে ওই হোটেলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দেখানো হয়েছে।গত সোমবার (২৯ মে) প্রথম শ্রম জজ আদালতে মামলাটির শুনানি হয়। শুনানিতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসির সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন।
আদেশে সাঈদ খোকনের জামিন আবেদন মঞ্জুর ও তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তথ্য-প্রমাণ ছাড়া মামলা করায় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরকে কারণ দর্শানোর আদেশ দিয়েছেন প্রথম শ্রম জজ আদালতের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী।
মামলার বাদী কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলার শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) মো. মাসুদ আলম। ফৌজদারি মামলা নম্বর ৭০/২০২২। মামলায় সাঈদ খোকন ছাড়াও জেরাল্ড রেবেরো ও তৌতম ব্রামা নামে আরও দুজনকে বিবাদী করা হয়েছে। জেরাল্ড রেবেরো ও তৌতম ব্রামা সাঈদ খোকনের ব্যক্তি মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী।
মামলার বিষয়ে সাঈদ খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, মামলাটির সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। গুলশানে যে হোটেলে শ্রম আইন লংঘনের অভিযোগ করা হয়েছে, সেটির মালিকানা বা পরিচালনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমাকে হয়রানির উদ্দেশে এ মামলা করা হয়েছে।
মামলার এজহারে বলা হয়, মামলাটির বাদী ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর রোডের হোটেল লং বিচ পরিদর্শন করেন। তখন তিনি বাংলাদেশ শ্রম আইন মোতাবেক শ্রমিকদের জন্য সার্ভিস বইয়ের ব্যবস্থা না থাকা, নির্ধারিত তথ্য সম্বলিত শ্রমিক রেজিস্টার সংরক্ষণ না করা, শ্রমিক বা কর্মচারীদের আইন মোতাবেক ছুটি না দেওয়া এবং রেজিস্টার সংরক্ষণ না করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম দেখেন। পরে লং বিচ কর্তৃপক্ষকে রেজিস্টার্ড ডাকে তাগিদপত্র পাঠান।
কিন্তু বিবাদীরা কোনো জবাব না দেওয়ায় বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬, ধারা ৩০৩(৫) এবং ৩০৭ মোতাবেক প্রথম শ্রম আদালতে এ মামলা করেন মাসুদ আলম। মামলায় লং বিচ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ব্যবস্থাপক জেরাল্ড রেবেরো, সহকারী ব্যবস্থাপক তৌতম ব্রামার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রথম শ্রম আদালত সূত্র জানায়, ওই মামলায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছিল। সে মোতাবেক সোমবার (২৯ মে) দুপুরে আদালতে সাঈদ খোকনসহ বাকি দুই বিবাদী উপস্থিত হন।
আইনজীবী সেলিম আহসান খান বলেন, মামলায় লং বিচ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সাঈদ খোকনের নাম দেওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ। যার ট্রেড লাইসেন্স আদালতে দাখিল করা হয়েছে। অন্য দুই বিবাদীও লং বিচের কর্মকর্তা বা কর্মচারী নন। এটি একটি হয়রানি মূলক মামলা।
তিনি বলেন, তাই আদালত আমাদের শুনানি গ্রহণ করে বাদীকে শোকজ করেছেন। আগামী ৬ জুন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। আশা করি, এ মিথ্যা মামলার দায়ে আদালত বাদীকে উপযুক্ত শাস্তি দেবেন। #কাশেম