দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
আগামী ১৪ জুনের মধ্যে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি ও খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদীর গুলশানের বাড়ি দখলের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৪ জুন প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। শুনানিতে পিটিশনার পক্ষে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন আর দুদকের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
উল্লেখ্য সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়িরনিয়ে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্টে সময় আবেদন করে দুদক। ওই দিন প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদককে ২ মে সময় দিয়েছিল। কিন্তু ২ মে মঙ্গলবার দুদক প্রতিবেদন দাখিল না করে ফের সময় চেয়ে আবেদন জানায়। ওই আবেদনে উপর শুনানি শেষে দুদককে ১৪ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আবেদনে বলা হয়, এ মামলায় ১৯৬০ সাল থেকে নথি পর্যালোচনা করতে সময় প্রয়োজন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার শুনানি শেষে আগামী ৪৫ দিনের (১৪ জুন) মধ্যে এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গত ১৬ জানুয়ারি সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত মূল নথি এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন এফিডেভিট করে এক সপ্তাহের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
এর আগে ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত নথি ও প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন দুদককে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গত ৩০ জানুয়ারি সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত রাজউকের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করে বলা হয়, বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই।
এরপর গুলশানের পরিত্যক্ত ওই বাড়ির নকশা (মূল লে আউট প্ল্যান) দাখিল করেছে রাজউক। আদালতের নির্দেশনার আলোকে হাইকোর্টে এ নথি দাখিল করা হয়। গুলশানের ওই বাড়ি নিয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানি হয়।
আদালতে ওইদিন রিট আবেদনের পক্ষে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, সালাম মুর্শেদীর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা, দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান, রাজউকের পক্ষে আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও তার সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম (কলী)।
আইনজীবীরা জানান, গুলশানে সালাম মুর্শেদীর বাড়ি নিয়ে বিতর্কের জেরে পুরো গুলশানের মূল নকশা হাইকোর্টে দাখিল করেছে রাজউক। ওইদিন দুদককে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেন, বারবার সময় আবেদন করে অনুসন্ধানকে বিলম্বিত করা হচ্ছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি সালাম মুর্শেদীর নিয়ন্ত্রণে থাকা গুলশানের পরিত্যক্ত বাড়ির নকশা (মূল লে আউট প্ল্যান) সাত দিনের মধ্যে দাখিল করতে রাজউককে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালতের কার্যক্রম ছাড়া মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো ধরনের প্রচার-প্রচারণা না চালাতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত। রুল শুনানির জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।
সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশানের পরিত্যক্ত (‘খ’ তালিকাভুক্ত) বাড়িটি দখলের অভিযোগ তুলে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে গত বছরের ৩০ অক্টোবর রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে প্রয়োজনীয় নথি দাখিলে রাজউক ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
রিট আবেদনে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কে সিইএন (ডি)-২৭-এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে পরিত্যক্ত হিসেবে ‘খ’ তালিকাভুক্ত। তবে সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন। রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও চলতি বছরের ৪ জুলাই রাজউক চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়। # কাশেম