দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চন্দ্রিমা হাউজিং, বসিলা গার্ডেন সিটি, দয়াল হাউজিং এলাকায় কয়েকটি খামার পরিদর্শন করেন। ওই সময় তিনি লাউতলা-রামচন্দ্রপুর খালের পারের অবৈধ স্থাপনা ১৫ দিনের মধ্যে সরাতে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিদর্শনকালে মেয়রের উপস্থিতিতে খামারের সকল বর্জ্য খালে ফেলে পানি দূষণ ও পরিবেশের ক্ষতি করায় একটি খামারকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন অ ল-০৫ এর আ লিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ।
বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ডের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শনকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লাউতলা-রামচন্দ্রপুর খালের পারের অবৈধ স্থাপনা ১৫ দিনের মধ্যে সরাতে নির্দেশ দিয়েছেন। পরে এক মতবিনিময় সভায় ওই এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন মেয়র।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. সাদেক খান, ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, অঞ্চল-০৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ৩৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ, ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ হোসেন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রোকসানা আলম প্রমুখ।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘রামচন্দ্রপুর খাল একটি ঐতিহাসিক খাল ছিল। আমরা সেটি উদ্ধার করেছি। ময়লার কারণে খালটা আবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এখানে মাছের নয় মশার চাষ হচ্ছে। আমি স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছি খামারের বর্জ্য সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা না করতে পারলে অন্য জায়গায় এই খামার স্থানান্তর করতে হবে, খালের সীমানার মধ্যে যে স্থাপনা আছে তা অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে, খামারের গো-বর্জ্য ইটিপি ট্রিটমেন্ট করেই কেবল খালে ফেলা যাবে। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কাজকে আমি পারমিশন দিব না।’
তিনি বলেন, ‘খালের সীমানা নির্ধারণ করে পিলার বসানো হয়েছে। যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে খালের পারে এই সীমানার বাইরেও তারা অবৈধভাবে স্থাপনা করছে।’
মেয়র বলেন, ‘খালের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নিজ দায়িত্বে আপনারা সরিয়ে নিবেন। নিজেরা অবৈধ স্থাপনা না সরালে আমরা বুলডোজার দিয়ে সেই স্থাপনা ভেঙ্গে দিব। আজকে আমরা ভাঙতাম যেহেতু ওনারা বলেছে ভিতরে প্রচুর পশু রয়েছে এ পশুদের সরানো চ্যালেঞ্জিং হবে। পশুগুলোও আমাদের সম্পদ তাই এর ক্ষতি করা ঠিক হবে না। আমি তাদেরকে পনেরো দিন সময় দিয়েছি। এর পরে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিব।’
তিনি বলেন, ‘৩৩ নং ওয়ার্ডে প্রচুর গরুর খামারীরা ব্যবসা করছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো খামারগুলোর গো-বর্জ্যসহ অন্যান্য সকল বর্জ্য খালে ফেলা হচ্ছে। আপনার দেখেছেন খালটি উদ্ধারের পর আমি গত বছর এই রামচন্দ্রপুর খাল পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম।’
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘’রাজধানীর বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী ঢাকার আশপাশের ইটভাটা। গবেষণা অনুসারে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকা শহরের বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা ৫৮ শতাংশ দায়ী। এ ছাড়া সড়ক ও মাটি থেকে সৃষ্ট ধুলা দ্বারা ১৮ শতাংশ, যানবাহনের জন্য ১০ শতাংশ, বিভিন্ন জিনিসপত্র পোড়ানোর জন্য ৮ শতাংশ ও অন্যান্য কারণে ৬ শতাংশ বায়ু দূষিত হচ্ছে। ধুলাবালি নিবারণে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন অত্যাধুনিক স্প্রে ক্যাননের মাধ্যমে পানি ছিটাচ্ছে। দুটি স্প্রে ক্যানন ডিএনসিসি এলাকার মহাসড়কে পানি ছিটানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ডিএনসিসির আওতাধীন পুরো এলাকার মহাসড়ককে দুটি ভাগে ভাগ করে একদিন অন্তর অন্তর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দু’টি মেশিন দিয়ে পানি ছিটানো হচ্ছে। মহাসড়ক ছাড়াও ডিএনসিসি এলাকার অন্যান্য সড়কগুলোতে ১০টি ওয়াটার ব্রাউজার দিয়ে প্রতিদিন সকালে ও বিকালে দুইবার পানি ছিটানো হয়। নির্মাণাধীন সড়কে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বেশি পরিমাণ পানি ছিটানো হয়।’
# কাশেম