দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম নগরবাসীকে মশার প্রজননক্ষেত্র পরিষ্কারের জন্য ৭দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন। তিনি বলেন, মালিকানাবিহীন ঢাকা শহরের কোনো জায়গা নেই।
এ নগরীর প্রতিটি জায়গার মালিক কোন ব্যক্তি কিংবা কোনো সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। যারফলে স্বস্ব মালিক ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের জলাশয় এবং পরিত্যক্ত জায়গা দ্রæত পরিষ্কার করতে হবে। এ ব্যাপারে তাদেরকে ৭ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে। এ৭দিন পর আমি মেয়র) নিজে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করবো এবং ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালাবে।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরে নগর ভবনের অডিটোরিয়ামে কিউলেক্স মশার প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় সভায় মেয়র এ নির্দেশ দেন।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, ডিএনসিসির মশক নিয়ন্ত্রণ স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ১১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেওয়ান আবদুল মান্নান প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করা সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য বিভাগসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধি এবং ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকার বিভিন্ন হাউজিং সোসাইটির প্রতিনিধিদের উদ্দেশে আতিকুল ইসলাম বলেন, কোথাও কচুরিপানা বা মশার প্রজননক্ষেত্র পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মশার প্রজননক্ষেত্র পেলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ছাড় দেওয়া হবে না। নিয়মিত মামলা দেওয়া হবে। সরকারি ও বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আমি সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখেছি এয়ারপোর্টের পার্শ্ববর্তী খাল, জলাশয় ও ডোবাগুলোতে মশার চাষ হচ্ছে। এগুলো সিভিল অ্যাভিয়েশন, রাজউক, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য সংস্থার অধীন। জলাশয়গুলোতে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা। এই কচুরিপানা পরিষ্কার না করলে আমরা সিটি করপোরেশন থেকে যতই মশার ওষুধ দেই না কেন, মশা নিধন করা সম্ভব না। সবাইকে নিজেদের খাল, জলাশয় ও ডোবা পরিষ্কার করতে হবে। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব নিতে হবে।
এসময় ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগকে সব সংস্থা ও হাউজিং সোসাইটিগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে এক বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্দিষ্ট করে একটি ক্যালেন্ডার প্রণয়নের নির্দেশ দেন তিনি।
ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, শুধু কিউলেক্স মশা নয়, এডিস মশাও এখনো রয়েছে। আমাদের মশক নিধন কার্যক্রম ও অভিযান চলমান। দুই ভবনের মাঝখানে খালি জায়গায় অনেকে ময়লা ফেলে দেন। দয়া করে এটি বন্ধ করুন। স্থানীয় জনগণ ও হাউজিং সোসাইটির উদ্যোগে এগুলো বন্ধে কাজ করুন। অনেক হাউজিং সোসাইটি মশার ওষুধ ছিটানোর মেশিন কিনেছেন। আমরা সেসব সোসাইটিকে ডিএনসিসি থেকে বিনামূল্যে মশার ওষুধ সরবরাহ করব।
আতিকুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন বাসা-বাড়ির ও অন্যান্য ভবনের পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ সরাসরি বৃষ্টির পানি নামার সারফেস ড্রেনে দিয়ে শহরের খাল ও জলাশয় দূষণ করছে। আমরা বার বার বলেছি, প্রতিটি ভবনে অ্যাট সোর্সে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে হবে। গুলশান, বনানী, নিকেতন ও বারিধারা এলাকায় আমাদের বর্জ্যবিভাগ থেকে এরইমধ্যে সমীক্ষার কাজ সম্পন্ন করেছে।
আগামী জানুয়ারিতে এসব এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। সারফেস ড্রেনে পয়ঃবর্জ্যের সংযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় কীটতত্ত¡বিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসার বলেন, মানুষ এখন অনেক সচেতন। সবাই জানেন কেন এবং কোথায় মশার জন্ম হয়। কিন্তু মানুষ মশা নিয়ন্ত্রণে সম্পৃক্ত হচ্ছে না। মশা নিয়ন্ত্রণে মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি সম্পৃক্ত হতে হবে। একা কারো পক্ষেই মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। # কাশেম