দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
সমাজের দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী, বিত্তশালী এবং ক্ষমতাবানরা কি আইন ও বিচারের ঊর্ধ্বে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত একই সঙ্গে , দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেছেন এসব ক্ষমতাবানরা বিচারের ঊর্ধ্বে কিংবা ধরা- ছোঁয়ার বাইরেই থাকবে।
রোববার (২৭ নভেম্বর) প্রায় ১১০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় দুই আসামির জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানিকালে এমন প্রশ্ন তোলেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বে ।ওই সময় আদালতে দুদকের আইনজীবী এম এ আজিজ খান ও খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, বিসমিল্লাহ গ্রæপের এমডি খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ মামলা করেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ইস্কাটন শাখার ম্যানেজার নকীবুল ইসলাম। এ মামলায় ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর ব্যাংকটির তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার এএসএম হাসানুল কবীর ও জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মান্নাতুল মাওয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়। মামলায় ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর দুজনকে জামিন দেন বিচারিক আদালত। পরে সেই জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন।
এরমধ্যে ২০১৮ সালে পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। রোববার ওই দুজনের জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানিতে হাইকোর্ট দুদকের আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ১১০ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৩ সালে মামলা হয়েছে। এ মামলা এখনো কেন (বিচার) হচ্ছে না। এদের ধরবে কে? আপনারা ধরছেন চুনোপুঁটি।
তখন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অবশ্যই দুদকের ধরা উচিত। এদের ধরবে।
এসময় আদালত বলেন, কবে ধরবেন? মামলা ২০১৩ সালের। চার্জশিট ২০১৫ সালে। এরপর ফের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কোর্ট। এত বছর হয়ে গেলো! এগুলোর কী হবে? এতে বোঝা যায়, যারা অর্থশালী পাওয়ারফুল, তারা বিচারের ঊর্ধ্বে? এরা ধরাছোঁয়ার বাইরে? আপনারা বিষয়টি সিরিয়াসলি নিতে দুদক চেয়ারম্যানকে বলবেন। এ ধরনের মামলা শেষ হচ্ছে না কেন? প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে না নয় বছর চলে গেছে।
এসময় এক আসামির আইনজীবী বলেন, আমরা তো নি¤œস্তরের ব্যাংকার। তখন আদালত প্রশ্ন করেন, মামলার প্রধান আসামি খাজা সোলায়মান কে? জবাবে খুরশীদ আলম খান বলেন, বিসমিল্লাহ গ্রæপের, তিনি পলাতক। এক মামলায় তার সাজা হয়েছে। তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতারে আপনার কোর্টের আদেশও আছে।
আদালতে অন্য মামলার শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আসেন। আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেখেন অ্যাটর্নি জেনারেল। মামলার অবস্থা। ২০১৩ সালের মামলা, এখনো প্রতিবেদন দেননি। ১১০ কোটি টাকার মামলা। এরপর দুদক আইনজীবী বলেন, আমরা হালনাগাদ তথ্য জানাবো। #