দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
সাবেক মন্ত্রী ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেডের (বিআইএফসি) প্রায় ২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল মান্নান।
দুদকের মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- বিআইএফসি’র সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের মালিক সিরাজুল ইসলাম, বিআইএফসি পরিচালক আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, এ এম এম জাহাঙ্গীর আলম ও পরিচালক রইস উদ্দিন আহমেদ, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদ মালিক, সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনামুর রহমান, সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়ফ ফকরে ফয়সাল, সাবেক এভিপি আহমেদ করিম চৌধুরী ও সাবেক সিনিয়র অফিসার মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ।
দুদক সচিব বলেন, বিআইএফসির সাবেক চেয়ারম্যান তার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও কর্মকর্তাদের সহায়তায় প্রতারণামূলকভাবে মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের মালিক সিরাজুল ইসলামের নামে নিরাপত্তা জামানত ও মর্টগেজ ছাড়াই ১১ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে গ্রাহকের ২৩ কোটি ৮৯ লাখ ৯ হাজার ১২৩ টাকা আত্মসাৎ করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দÐবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ধারায় মামলা অনুমোদন করেছে। ফলে যে কোন সময় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলাটি রেকর্ড করা হবে।
দুদকের মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, মেসার্স টেলিকম সার্ভিস এন্টারপ্রাইজের মালিক সিরাজুল ইসলাম, তার স্বাক্ষরে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ বিআইএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর ৬০ দিন মেয়াদের ১১ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের বিপরীতে ব্যবস্থাপনা কমিটি ১৮ শতাংশ সুদে ৬ মাসের জন্য এমন প্রস্তাব বোর্ডে উত্থাপন করে। সিকিউরিটি হিসেবে প্রায় ১২ কোটি টাকার তারিখবিহীন স্বাক্ষরিত চেক রাখার কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে নিরাপত্তা জামানত হিসেবে চেক কিংবা অন্য কোনো সম্পদ মর্টগেজ নেওয়া হয়নি।
এমনকি তাদের আবেদনকারীর সিআইবি রিপোর্টও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা হয়নি। ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের ৭৫তম সভায় এই ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি আলোচিত হয় এবং ৬ মাসের জন্য ১০ কোটি টাকা ঋণ প্রদানের বিষয়টি অনুমোদিত হয়। কিন্তু বিতরণ করা হয় ১১ কোটি টাকা।
এজহারে জানানো হয়, আসামি সিরাজুল ইসলাম অপর আসামি আহমেদ করিম চৌধুরীর ভাই, যিনি বিআইএফসির এভিপি ও ইউনিট হেড। ঋণগ্রহীতা আসামি সিরাজুল ইসলাম মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের প্রতিষ্ঠান সানম্যান গ্রæপের ডিজিএম। অপর আসামি কোম্পানির পরিচালক রইসউদ্দিন মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানের শ্যালক এবং পরিচালক উম্মে কুলসুম মান্নানের (মেজর মান্নানের স্ত্রী) ভাই ।
মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানসহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এর আগেও ২টি মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। মামলাগুলোতে ১৪ কোটি ৩০ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ও ২৮ কোটি ৮৪ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। #