দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের ১২ কোটি ৮৯ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার তদন্তে আসামীদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতির ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ৮ আগস্ট তলব করেছেন হাইকোর্ট। ওই মামলার দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিচালক নূর হোসেন খানকে হাইকোর্টে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
দুদকের তদন্তে ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় অভিযোগ থেকে সব আসামীকে অব্যাহতির প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারিক বিশেষ জজ আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করেছিলেন। আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে করা রিভিশনের শুনানি গত ৪ আগস্ট গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। ওই দিন একই সঙ্গে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়তের সমন্বয়ে গঠিত বে এক আদেশে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ৮ আগস্ট তলব করেছেন।
হাইকোর্টে রিভিশনের শুনানিতে সোনালী ব্যাংকের (বাদী) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এবিএম বায়েজীদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক গণমাধ্যমকে বলেন, অব্যাহতি আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন করেন মামলার বাদী। শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ১৫ জুন রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে অব্যাহতির আদেশ কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। এ রুলের শুনানিতে গত ৪ আগস্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে তলব করা হয়েছে।
সূত্র মতে,২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মিরন মিয়া ডিএমপির শাহবাগ থানায় ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় একটি মামলা করেন। মামলায় সোনালী ব্যাকের সাবেক ডিজিএম আলতাফ হোসেন হাওলাদার, মেলবা টেক্সটাইলস মিলসের চেয়ারম্যান মোরশেদ রাজ্জাক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকি আহমেদকে আসামী করা হয়। পরে মামলাটি দুদকের সিডিউলভুক্ত অপরাধ হওয়ায়, থানা থেকে দুদকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত অভিযুক্ত আলতাফ হোসেন হাওলাদার সোনালী ব্যাংকের রমনা করপোরেট শাখার প্রধান কর্মকর্তা ছিলেন। ওই সময় তিনি বিধিবর্হিভূতভাবে এবং জালিয়াতির মাধ্যমে ‘মেলবা টেক্সটাইলস মিলসের অনুকূলে ১২ কোটি ৮৯ লাখ ৬৩ হাজার ৬৭৯ টাকা ঋণ প্রদানের সুযোগ করে দেন।
ঋণের ওই অর্থ আর ব্যাংকে জমা না অভিযুক্তরা আত্মসাত করেন। সোনালী ব্যাংকের ওই ঋন সুদে-আসলে ২১ কোটি ৫৯ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৩ টাকা পাওনা রয়েছে।
কিন্ত মামলার তদন্ত শেষে দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৪ সালের ২৫ মে আসামীদেরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ২০১৪ সালের ৩০ জুন চূড়ান্ত প্রতিবেদন শুনানি গ্রহণ করে মামলায় অভিযুক্ত সব আসামীকে অব্যাহতের আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ মো. জহুরুল হক। #