দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, নগরীর বাসযোগ্যতার সূচকে উন্নতি করতে তারা কাজ করে চলেছেন। তিনি বলেন, “বাসযোগ্যতার সামষ্টিক সূচকে ২০২১ সালে ঢাকা শহরের অর্জিত পয়েন্ট ছিল ৩৩.৫ নম্বর। এবছর আমরা ৩৯.২ নম্বর ফেয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা চার ধাপ উন্নতি করেছি। আমরা আগে ছিলাম সর্বনিম্ন থেকে তিন নম্বরে, এখন আমরা সাত নম্বরে উন্নীত হয়েছি।”
রোবাবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ পানি উনয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন রেগুলেটর/আউটলেট স্ট্রাকচারসমূহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিকট হস্তান্তর উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস এ তথ্য জানান।
সমঝোতা স্মারকে দক্ষিণ সিটির পক্ষে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে সংস্থার মহাপরিচালক প্রকৌশলী ফজলুর রশিদ স্বাক্ষর করেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী, উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো সেলিম রেজা, ওয়াসার এমডি ড. তাকসিম এ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বাসযোগ্য শহরের তালিকায় ঢাকা চার ধাপ এগিয়েছে। আমরা সিরিয়া, করাচির নিচে ছিলাম। ত্রিপোলিরও নিচে ছিলাম। ২০২১ সালে এই সূচক যখন প্রকাশিত হলো, তখন আমরা বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছি। যদিওবা আগাগোড়া ঢাকা শহর দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থানে ছিল। কিন্তু ঢাকাবাসীর প্রত্যাশা, জনগণের প্রত্যাশা — যে মেয়রা দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে সবকিছু পরিবর্তন হয়ে যাবে! আজকে অত্যন্ত আনন্দের সাথে, দৃঢ়তার সাথে এ বিষয়ে বলতে চাই যে, আমরা বদলে দিয়েছি। নগর বাসযোগ্যতার সূচকে উন্নতি করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কাজ করছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর পরিকল্পনা বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
মেয়র শেখ তাপস বলেন, ” ঢাকা ওয়াসা থেকে আমরা যখন খালগুলো ফেয়েছি তখনই আমরা এই স্যুইস গেটগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য বলে ছিলাম। আজকে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। এগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। আমরা এরই মাঝে এই স্যুইচ গেটগুলো মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। আজকে হস্তান্তরের সাথে সাথেই এগুলো যথারীতি মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ আমরা আগামীকাল থেকেই শুরু করব। প্রত্যেকটা স্যুইস গেট অচল রয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ” ঢাকা ওয়াসা থেকে খালগুলো সিটি করপোরেশনে নিকট হস্তান্তরের ফলে আমরা নগরবাসীকে এর সুফল দিতে পেরেছি। খাল উদ্ধার করে পানির প্রবাহ নিশ্চিত করতে খাল খনন ও বর্জ্য অপসারণ করে চলেছি। এর ফলে ঢাকার জলাবদ্ধতার সমস্যা অনেকাংশে সমাধান হয়েছে। আমরা জনগণের ভোটে দায়িত্ব নিয়ে এসেছি, আমরা বসে নেই। নগরবাসীর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী ১লা সেপ্টেম্বর থেকে পয়ঃবর্জ্যের লাইন খালে পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যানজট নিরসনে খালগুলোকে রক্ষা করে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করে আমাদেরকে ন্যাচার- বেজড সলিউশন করতে হবে।”
মন্ত্রীমা. তাজুল ইসলাম বলেন, “ঢাকার চারপাশে নদ-নদীর উপর যে সেতুগুলো রয়েছে সেগুলো নৌ-যান চলাচলের উপযোগী নয়। ইতোমধ্যে সেসব সেতু চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেগুলো ভেঙ্গে নৌ-যান চলাচল উপযোগী করে নির্মাণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নৌ-রুট চালু করতে পারলে ঢাকার রাস্তায় ট্রাফিক অনেকটাই কমে আসবে।”
মন্ত্রী বলেন, “ঢাকা ওয়াসার নিকট থেকে ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনের কাছে খাল হস্তান্তরের পর সেগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, খনন-পুনঃখনন ও সংস্কার করা হচ্ছে। অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া অনেক জায়গা ও খাল উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর জলাবদ্ধতা অনেক কম হয়েছে। আমরা দেখেছি ঢাকা শহরের রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যেতো। আজ কিন্তু সেই পরিস্থিতি নেই।”
পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, “ঢাকায় বৃষ্টির পানি সরে যাওয়ার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। আগে বৃষ্টির পানি খাল দিয়ে নদীতে চলে যেত কিন্তু এখন এসব খাল ও নদী প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। এমতবস্থায় সিটি করপোরেশন রাজধানীর খালগুলো সংস্কার ও সৌন্দর্যবধর্নে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছে, তা সত্যিই আশাব্যঞ্জক। সিটি কপোরেশনের কার্যকলাপ আমাদেরকে আমার আলো দেখাচ্ছে।” #