দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
দেশের আলোচিত রাজধানীর সদরঘাটে ল টার্মিনালে পা হারানো পটুয়াখালীর দিনমজুর মো.কবির হোসেনকে উন্নত চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ বাবদ এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ কেনো দেওয়া হবে না, তার জবাব চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
দেশের উচ্চ আদালত একই সঙ্গে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিআইডবিøউটিএ চেয়ারম্যান ও পূবালী-১২ লে র মালিক আলী আজগর খালাসীসহ ৮ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১৫ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বে সদরঘাটে ল টার্মিনালে পা হারানো দিনমজুর মো.কবির হোসেনের উন্নত চিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত রিটের শুনানি শেষে রুলসহ এ আদেশ জারি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. তানভির আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মাইনুল হক হাওলাদার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. তানভির আহমেদ। তিনি জানান, গত ৯ জুন পা হারানো কবিরকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার এ আদেশ দেন আদালত।
এর আগে পা হারানো কবিরকে মানসিক ও স্বাস্থ্যগত চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ বাবদ এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে গত ২৯ মে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান অ্যাডভোকেট তানভির। নোটিশে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিআইডবিøউটিএ চেয়ারম্যান ও পূবালী-১২ লে র মালিক আলী আজগর খালাসীসহ নেওয়ায় হাইকোর্টে রিট করা হয়।রিটে ভিকটিমের চিকিৎসার জন্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ লাখ টাকা এবং তার শারীরিক-মানসিক ক্ষতির জন্য অবশিষ্ট ৯৫ লাখ টাকা ৭দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়।
রিটে আরও বলা হয়, রাজধানীর নবাবপুরে বৈদ্যুতিক পাখার দোকানে দিনমজুরের কাজ করতেন পটুয়াখালীর বাসিন্দা কবির হোসেন (২৮)। ঈদুল ফিতরের একদিন আগে গত ১ মে সকালে স্ত্রী, মেয়ে ও তিন বোনকে নিয়ে সদরঘাটে যান তিনি। ঘাটে পটুয়াখালীর একটি ল থাকলেও সেটি কানায় কানায় ভরা থাকায় স্বজনদের নিয়ে লে উঠতে পারেননি কবির।
সেখানে অপেক্ষার পর পূবালী-১২ ল টি ঘাটে ভিড়তে শুরু করে। বেশি গতি থাকায় এটি পন্টুনে এসে জোরে ধাক্কা দেয়। অন্যদিকে যাত্রীর প্রচন্ড চাপ পন্টুনে। এ সময় ল ও পন্টুনের মাঝে চাপ খেয়ে কবির হোসেনের বাঁ পা হাঁটুর নিচ থেকে প্রায় আলাদা হয়ে যায়। কেটে ফেলতে হলো বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ। আর শাহজালাল নামে আরেক ব্যক্তির ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে ভেঙে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এরপর ল টির মালিকপক্ষ কবিরকে চিকিৎসার খরচ বাবদও এক লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিল। ক্ষতিপূরণ হিসেবে আরও অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রæতিও দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে মালিকপক্ষ তার সঙ্গে আর যোগাযোগই করেনি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন পা হারানো কবির হোসেন। #