দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
দেশের আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামী সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। সাহেদ করিম করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ জালিয়াতি ও অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজা প্রাপ্ত আসামী। ওই মামলায় হাইকোর্ট তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছিল।
রোববার (১২ জুন) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহীমের চেম্বার আদালত ওই জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে গ্রহণ করে সাহেদের জামিন স্থগিত করেন। একই সঙ্গে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেে ১ আগস্ট শুনানির দিন ধার্য করেন।
আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ ও ড. মো.বশির উল্লাহ। সাহেদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন ঢাকার বিশেষ আদালত। মামলায় সাহেদকে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯(ক) ধারায় যাবজ্জীবন ও (চ) ধারায় সাত বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়। দুটি সাজা একত্রে চলবে বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ওই অস্ত্র বাজেয়াপ্ত ও যে গাড়ি থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে, তার মালিকানা যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আমাদের এ সমাজে সাহেদের মতো ভদ্রবেশে অনেক লোক রয়েছে, যা এই মামলার দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে। সাহেদ ২০ লাখ টাকা লোন নিয়ে গাড়ি ক্রয় করেন। কিন্তু আদালতের কাছে স্বীকার করেননি। আদালতের কাছে মিথ্যা তথ্য দেন। সাহেদ অত্যন্ত চালাক ও ধুরন্ধর ব্যক্তি। গাড়িতে অস্ত্র রাখার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তিনি আদালতের কাছে কোনো অনুকম্পা পেতে পারেন না।
পরে হাইকোর্টে আপিল করে জামিন চান সাহেদ। ওই জামিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ৭ জুন তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন ( র্যাব)। পরে তাকে হেলিকপ্টারে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আনা হয়। এরপর তাকে নিয়ে উত্তরায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করে সংস্থাটি। পরে উত্তরা পশ্চিম থানায় র্যাব অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করে।
একই বছরের ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। পরদিন ৭ জুলাই রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। সাাহেদের বিরুদ্ধে সারাদেশে অর্ধশত মামলা রয়েছে। এর বেশির ভাগই প্রতারণার অভিযোগে করা। #