দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
উন্নত বাংলাদেশ গড় তুলতে জনশুমারি ও গৃহগণনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ বিষয়ক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শুমারি/ জরিপ কমিটির সভায়’ মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এই মন্তব্য করেন।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জনশুমারি ও গৃহগণনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। যেভাবে আপনারা (কাউন্সিলরবৃন্দ) এই ঢাকাকে উন্নত ঢাকা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিবেদিতভাবে কাজ করে চলেছেন, তেমনি আগামী ১৫ জুন থেকে ২১ জুন আপনারা সেভাবে এই জনশুমারিতে সহযোগিতা করবেন। আপনারা সকলেই সম্মিলিতভাবে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করবেন।”
১৯৭৪ সালে প্রথম আদমশুমারির ভিত্তিতে জাতির পিতা প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন করলেও ৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো তা না করায় বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারেনি মন্তব্য করে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা শুরু করেন। তিনি এই আদমশুমারির ভিত্তিতেই সেই পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। সারা বিশ্বে এটাই নিয়ম।
কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ৭৫ এর পরে নতুন এক পদ্ধতি বলা হলো, না এসব পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করে কোন লাভ নেই। কারণ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা করতে গেলে মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। অন্য সরকার চলে আসে। আমি কি করলাম না করলাম বোঝার আগেই তো কাজ শেষ! তো এজন্য এটার দরকার নেই। কি হলো — কৌশলগত পরিকল্পনা বা স্ট্রাটেজিক প্লান? দুই বছর, এক বছরের স্ট্র্যাটেজিক পরিকল্পনা নেবো, করেই আমরা আমাদের মেয়াদটা সম্পন্ন করব। সারা বিশ্বে এক দিকে আগায় আর ওনারা অন্য পথে ধাবিত হলো। যার ফলে তারা বাংলাদেশের কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে আবার সরকার গঠন করার পরে তিনি আবার এই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা আরম্ভ করেন এবং সেটার ভিত্তিই হলো এই শুমারি।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আমরা ডিজিটাল শুমারি করতে যাচ্ছি। এটা আমাদের জন্য একেবারে নতুন একটা অভিজ্ঞতা হবে। কিন্তু এই অভিজ্ঞতা আমাদেরকে একবারেই অনেক দূর নিয়ে যাবে, যেখানে ডিজিটাল স্বপ্ন বাস্তবায়নে অনেকটা পথ আমরা অতিক্রম করতে পারব।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যাুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’ সফল করতে সকল কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের সহযোগিতা কামনা করেন।
ব্যাক্তির সরবরাহকৃত তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা হবে উল্লেখ করে জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্প ২০২২ এর প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন বলেন, “হ্যাকারদের কবল হতে সংগৃহিত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং এসব তথ্য শুধু সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় ব্যবহার করা হবে। কারো ব্যক্তিগত তথ্য অন্য কোনো ব্যক্তি বিশেষের নিকট অবমুক্ত করা হবে না।”
সারাদেশে মাঠপর্যায়ে প্রায় ৩ লক্ষ ৭০ হাজার স্থানীয় শিক্ষিত যুবক/ যুব মহিলা এই জনশুমারিতে তথ্য সংগ্রহে নিয়োজিত থাকবে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয় যে, আগামী ১৫-২১ জুন সারাদেশে একযোগে এই জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ অনুষ্ঠিত হবে। দেশের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি হিসেবে পরিচিত এই শুমারিতে Geographic Information System (GIS) বেইজড ডিজিটাল ম্যাপ ব্যবহার করে Computer Assisted Personal Interviewing (CAPI) পদ্ধতিতে ৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ট্যাবের মাধ্যমে জনগণের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদের সভাপতিত্বে ও সচিব আকরামুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শুমারি সভায় করপোরেশনের কাউন্সিলরবৃন্দসহ করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর সিতওয়াত নাঈম, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবিরসহ করপোরেশন ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যাুরোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।