দূরবীণি নিউজ প্রতিনিধি :
কিছু জাল ডকুমেন্টে প্রস্থাবিত চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরনের বিষয়ে রিট দায়েরকারী ৩জনকে কোটি টাকা জরিমানা করেছেন হাইকোর্ট। আগামী দু’মাসের মধ্যে তাদেরকে জরিমানর এ অর্থ পরিশোধ করতে হবে। উচ্চ আদালত একইসঙ্গে তাদের রিটের প্রেক্ষিতে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রদান করেন। রায়ে রিটকারী চাঁদপুর সদর উপজেলার ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম খানকে ৫০ লাখ টাকা, স্থানীয় বাসিন্দা জুয়েলকে ২৫ লাখ টাকা ও আব্দুল কাদের মিয়াকে ২৫ লাখ জরিমানা করা হয়।
কারণ রিটকারীরা কিছু জাল ডকুমেন্টে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরন হিসেবে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকার প্রাক্কলনের বৈধতা নিয়ে রিট আবেদন দায়ের করেছিলেন বলে অভিযোগ প্রমাণীত হয়েছে। রিটকারীরা আদালতের সময় নষ্ট করেছেন। এসব বিবেচনায় নিয়ে রুল খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। তিনি গণমাধ্যমকে জানান, রিট আবেদনকারীরা কিছু জাল ডকুমেন্ট দিয়েছেন। একই সঙ্গে সেলিম খানকে ৫০ লাখ টাকা ও অপর দু’জনকে ২৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন।
২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া আইন মন্ত্রিসভা চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করে। পরে ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস হয়। আর জমি অধিগ্রহণের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয় ২০২১ সালের ৬ এপ্রিল।
গত বছরের ৪ নভেম্বর চাঁদপুর জেলা প্রশাসন প্রস্তাবিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকার প্রাক্কলন প্রস্তুত করে অর্থ ছাড়ের জন্য উপাচার্য বরাবর চিঠি দেয়। একই বছরের ১৪ অক্টোবর জমির মূল্যহার পরীক্ষা ও সংগ্রহের জন্য ১৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন।
কিন্তু জেলা প্রশাসনের প্রাক্কলন সংশোধন চেয়ে গত বছরের নভেম্বরে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন মো. সেলিম খানসহ অন্যরা। পরে মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে ব্যাখ্যা জানতে চায়। চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিবেদন পাঠায়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৌজা দর ধরে জমি অধিগ্রহণের দাম নির্ধারণ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৬২ একর জমির জন্য (মূল দামের তিন গুণ ধরে) সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ১৯৪ কোটি টাকা। কিন্তু হঠাৎ উচ্চ মূল্য দেখিয়ে যেসব দলিল করা হয়েছে, সেটা আমলে নিলে সরকারকে ৫৫৩ কোটি টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ সরকারকে অতিরিক্ত দিতে হবে ৩৫৯ কোটি টাকা।
এ অবস্থায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের ১৪ অক্টোবরের (মূল্যহার পরীক্ষায় কমিটি গঠন) এবং ৪ নভেম্বরের (১৯৪ কোটা টাকা প্রাক্কলন) স্মারকের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সেলিম খান ও আব্দুল কাদের মিয়া রিট করেন। পাশাপাশি জুয়েলও রিট করেন।
একরিটে ৩০ নভেম্বর এবং আরেক রিটে ৬ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ৩ মার্চ দুটি রিটে জারি করা রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষ হয়। #