দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী অনুমোদিত ও আবেদন করা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। এর বাইরে আরও কয়েক হাজার ছোট বড় নামীদামী হাসপাতাল,ক্লিনিক ওডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এদের অনেকর নিবন্ধন থাকলেও নবায়ন আপটে নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে।
তবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছোট বড় অধিকাংশ ক্লিনিকগুলো রোগী এবং অভিভাবকদের জিম্মি করে চিকিৎসা সেবার নামে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চিকিৎসা সেবার নামে রমরমা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। অনেক ক্লিনিককে নিজস্ব ডাক্তার নেই, এমনকি আধুনিক যন্ত্রপাতিও নেই।
ভাড়া করা খন্ডকালীন ডাক্তার ডেকে এনে ক্লিনিককে প্রসূতি মায়েদের জোরকরে সিজার করানোসহ রোগীদের জটিল অপারেশন সংক্রান্ত চিকিৎসা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। অনেক সময় রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও প্রায় ঘটছে। বলতে গেলে অভৈধভাবে পরিচালিত ক্লিনিক ও ডায়গনস্টি সেন্টারের মালিকরা অসহায় রোগী ও অভিভাকদের সঙ্গে রীতিমতো প্রতারণার পাশাপাশি রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছেন।
শুধু তাইনয়, অধিকাংশ ক্লিনিক নিবন্ধনহীন এবং ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের ফায়ার সনদ আপডেট নেই। ফলে অগ্নিদূর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শতকরা ৯৫টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক।
সূত্র মতে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত ডা. মো. বেলাল হোসেন বৃহস্পতিবার (২৬ মে) গণমাধ্যমকে বলেছেন, সরকারের নির্দেশনার আলোকে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে দেশের অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কারণ অনেক ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিবন্ধন নেই।
আবার অনেকর নিবন্ধন নবায়ন করা হয়নি। তবে প্রয়োনীয় কাগজপত্রসহ আগামী ৭২ ঘন্টারমধ্যে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর দেখাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিবন্ধনহীন কোনো ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গত ২৫ মে সব অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সভায় আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অবৈধ সব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
যারা সিদ্ধান্ত মানবে না, তাদের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবেন জানতে চাইলে বেলাল হোসেন বলেন, যেসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেনি, সেগুলো অবৈধ। আমাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের পর যদি নিবন্ধনহীন কেউ কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর মনিটরিং ও সুপারভিশন বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরমধ্যে, ১) আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো বন্ধ করতে হবে। অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। এ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।
২) যেসব প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন গ্রহণ করেছে কিন্তু নবায়ন করেনি, তাদের নিবন্ধন নবায়নের জন্য একটি সময়সীমা দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে নবায়ন না করলে সেসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
৩). বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে অপারেশন করার সময় এনেস্থেসিয়া দেওয়া ওটি অ্যাসিস্ট করার ক্ষেত্রে নিবন্ধিত ডাক্তার ছাড়া অন্যদের রাখা হলে সেসব প্রতিষ্ঠান ও জড়িতদের বিরুদ্ধে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
৪) যেসব প্রতিষ্ঠান নতুন নিবন্ধনের আবেদন করেছে তাদের লাইসেন্স দেওয়ার কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে হবে। লাইসেন্স পাওয়ার আগে এসব প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম চালাতে পারবে না। #