দূরবণি নিউজ প্রতিবেদক :
স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্রসহ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তথা সাংস্কৃতিক উৎসব-উন্নয়নে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সবসময় চলচ্চিত্রজনদের পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
১ মার্চ (মঙ্গলবার) রাতে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরাম আয়োজিত ‘মুক্তিযোদ্ধা চলচ্চিত্রজনদের অভিবাদন এবং শুভেচ্ছা প্রদান’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এই মন্তব্য করেন।
মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “আপনারা যদি মনে করেন এবং আগ্রহী হউন, একটি সেবামূলক সংস্থা হিসবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ যে কোনও বেসরকারি ব্যাংক, প্রতিষ্ঠান পৃষ্ঠপোষকতা করতে আগ্রহী হবে এবং এগিয়ে আসবে। আমি এ সুবাদে বলছি — মধুমতি ব্যাংক আপনাদের সাথে কাজ করতে অত্যন্ত আগ্রহী হবে।
এ প্রেক্ষিতে আপনাদের যদি আবেদন থাকে তবে আমরা অবশ্যই সে বিষয়টি বিবেচনা করবো। এছাড়াও ঢাকা শহরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আপনাদের উৎসব ও যে কোনও কার্যক্রমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আপনাদের সাথে এবং আপনাদের পাশে থাকবে।”
লালকুঠি সংলগ্ন এলাকায় রাস্তাও নেই, নদীর পাড়ও নেই বলে আক্ষেপ প্রকাশ করে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা যেভাবে বাইরের শহরে গিয়ে নদীর থেকে ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো দেখে উপভোগ করি, সেই সুযোগটা আমাদের একদমই নেই। কারণ, বিআইডব্লিটিএ আমার রাস্তার অংশ অর্ধেক দখল করে নিয়ে যেভাবে নৌকা-লঞ্চের ঘাট করেছে! সুতরাং, আমার রাস্তাও নেই, নদীর পাড়ও নেই। নদীও দেখা যায় না, লালকুঠি তো দূরে থাক!”
ঘাট সরানো নিয়ে অনেক দেন-দরবার করতে হয়েছে জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “এ নিয়ে অনেক ধাক্কাধাক্কি চলছে। বিষয়গুলো আমরা দেখছি। ওনারা রাজি হয়েছে যে, লঞ্চঘাটটি তারা স্থানান্তর করবে। স্থানান্তর করলে আমরা সামনের নদীর অববাহিকা খুলে দেবো, সেখানে আমরা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করবো। যাতে ঢাকাবাসী সেখানে যেতে পারেন, নদী উপভোগ করতে পারেন, লালকুঠি উপভোগ করতে পারেন।”
লালকুঠি সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যবাহী একটি স্থাপনা রয়েছে — লালকুঠি। একসময় সেটাকে মিলনায়তন হিসেবে ব্যবহার করা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও সেখানে এসেছেন, অনুষ্ঠান করেছেন। ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে সেটার তাৎপর্য রয়েছে। আমরা সেটার সংস্কারে হাত দিয়েছি। সেটা বুড়িগঙ্গার পাড়ে। আমি প্রথম যেদিন সেটা গিয়ে দেখলাম এবং লক্ষ্য করলাম — সেটার চারপাশ দিয়ে এমনভাবে ভবন করে ফেলা হয়েছে যে, লালকুঠি আর নজরে আসে না।”
এ সময় মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস মুক্তিযোদ্ধা চলচ্চিত্রজনেরা চেতনার জাগরণে এখনো মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
‘১৬তম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসব ২০২২’ এর উৎসব পরিষদের চেয়ারম্যান নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চলচ্চিত্রজনদের যে গৌরব, তা নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাহিত হওয়া উচিত। সেজন্যই আমাদের এই আয়োজন। এই আয়োজনে ১৩০টি দেশের ৩ হাজার ৮০০ এর অধিক চলচ্চিত্র জমা পড়েছে। বাংলাদেশের কোনও ফোরামে এতগুলো দেশের সম্পৃক্ততা নেই। তাই, এই আয়োজন আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের।”
অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২৯ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা চলচ্চিত্রজনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তন্মধ্যে ১০ জন স্বশরীরে উপস্থিত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মানজারে হাসীন মুরাদ, উৎসব আয়োজক কমিটির পরিচালক সৈয়দ ইমরান হোসেন কিরমানী বক্তব্য রাখেন। #