বিশেষ প্রতিনিধি, দূরবীণ নিউজ :
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যম বিরোধী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিলের পাশাপাশি কারাবন্দি বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর মুক্তি দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। একই সঙ্গে তারা আরো বলেছেন, সরকার ভিন্নমত দমন ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের নির্বিচারে অপব্যবহার করছে।
আজ শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বগুড়ায় এক সাংবাদিক সমাবেশে নেতারা এই অভিযোগ আনেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ।
সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া (জেইউবি) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে শহরের টিএমএসএস মহিলা মার্কেট মিলনায়তনে এ সাংবাদিক সমাবেশের আয়োজন করে।
বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১০ মাস ধরে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। কারাবন্দী সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তি দাবি করে নেতৃবৃন্দ বলেন, সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত স্বাধীন মতামত বন্ধ করতে ডেটা প্রোটেকশন আইন নামের আরেকটি কালাকানুন পাশের প্রক্রিয়া সাংবাদিক সমাজ মেনে নেবে না।
জেইউবি সভাপতি মির্জা সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, জেইউবি সাধারণ সম্পাদক গণেশ দাস, জেইউবি নেতা সৈয়দ ফজলে রাব্বি ডলার, আলহাজ্ব মমিনুর রশীদ শাইন, মো. আবদুর রহীম, মাহফুজ মন্ডল, আবুল কালাম আজাদ, এস এম আবু সাঈদ, আতাউর রহমান মিলন প্রমুখ।
শওকত মাহমুদ বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আল্লাহ প্রদত্ত, কিন্তু বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার মত প্রকাশ ও ভোটের অধিকার হরণ করেছে। ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়েও মানুষ এক ধরনের মত প্রকাশ করে। অতএব ভোটাধিকারও আল্লাহ প্রদত্ত অধিকার।
তিনি বলেন, এখন দেশে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামী পন্থী সাংবাদিক হিসেবে বিভাজন নেই। আছে ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তি ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি। জড়তা কাটিয়ে সাহসের সাথে ফ্যাসীবাদী শাসনের পতন আন্দোলন জোরদার করতে হবে।
তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করে দীর্ঘদিন আটক রাখা সরকারের সাংবাদিক নিপীড়নেরই ধারাবাহিকতা। তিনি অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজীর মুক্তি দাবি করেন।
বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সাংবাদিক নির্যাতন-নিপীড়ন ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। প্রতি মাসে গড়ে ৬ থেকে ৮ জন করে সাংবাদিক হামলা, মামলাসহ নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ক্ষমতাধররা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে তাদের দুর্নীতি লুটপাটের রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করছে। নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণমাধ্যম দলনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজকে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজী দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তাঁকে বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার করে দশ মাস কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি না দিলে বিএফইউজে’র নেতৃত্বে সাংবাদিক সমাজ সারাদেশে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
বিএফইউজের মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরেছে। দাগী খুনি, সন্ত্রাসীদের জামিন হচ্ছে প্রতিদিন, অথচ শীর্ষ সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর জামিন নিয়ে টালবাহান চলছে। এটা চরম অন্যায়। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দিতে হেবে।
# এডিজেড/একে/ দূরবীণ নিউজ ।