দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
এবার তালেবান বাহিনী আফগানিস্তানের নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের (উত্তরের জোট) অন্যতম নেতা আহমদ মাসুদের অস্ত্রাগারও দখল করে নিয়েছে । প্রমাণ হিসেবে নেটমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। ওই ভিডিও নিজের টুইটার হ্যাণ্ডল থেকে পোস্ট করেছে ‘বোল নেটওয়ার্ক’নামে এক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক গুলাম আব্বাস শাহ।
গত সোমবার তালেবান নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পাঞ্জশির উপত্যকা এখন তাদেরই দখলে। শুধু তাই নয়, উপত্যকায় মাসুদের বাড়িও দখল করেছে তারা। এই দাবির সপক্ষে প্রকাশ করা ছবি এবং ভিডিওতে দেখা যায়, মাসুদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তালেব যোদ্ধারা।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, তালেবানের সাথে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন মাসুদের আত্মীয় আমির সাহিব আহমদ মাসুদ এবং উত্তরের জোটের অন্যতম কমান্ডার সাহিব আব্দুল ওয়াদুদ জোহর, এমনকি মাসুদের সহযোগী ফাহিম দাস্তিও।
অবশ্য, পাল্টা দাবি করে উত্তরের জোট জানায়, পাঞ্জশিরের ৬০ শতাংশ এলাকা এখনও তাদের দখলেই আছে। নিরাপদ আশ্রয়েই রয়েছেন মাসুদ। তার পরই একটি ভিডিও বার্তায় উপত্যকার ‘সিংহশাবক’ বলেন, ‘পাঞ্জশিরে পাকিস্তান সেনা তালেবানের হয়ে লড়ছে।
তারাই আমার পরিজন এবং ফাহিমকে খুন করতে তালেবানকে সাহায্য করেছে। গোটা বিশ্ব জানে পাকিস্তানই তালেবানের মদতদাতা। তবুও কেউ কিছুই বলছে না। আমরা এখনো পাঞ্জশিরে তালেবানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছি। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত চালিয়ে যাব।’’
মাসুদের বাবা আহমেদ শাহ মাসুদ প্রায় আড়াই দশক আগে তালেবানবিরোধী উত্তরের জোট গড়েছিলেন। ও সময়ও পাঞ্জশিরের দখল নিতে পারেনি তালেবান। ২০০১-এ টুইন টাওয়ার হামলার দু’দিন আগে সাংবাদিকের ছদ্মবেশে আল কায়দার মানববোমা হামলায় নিহত হয়েছিলেন তিনি।
মাসুদের অস্ত্রাগারই নয়, জোটের আর এক নেতা আমরুল্লা সালেহ্-র গ্রন্থাগারেও ঘাঁটি গেঁড়েছে তালেবান বাহিনী। ওই গ্রন্থাগার থেকেই সম্প্রতি ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন সালেহ্।
পাঞ্জশিরে আমরুল্লাহ সালেহর ভাই রুহুল্লাহ নিহত!
আফগানিস্তানের পাঞ্জশিরে তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এবার নিহত হলেন নর্দান অ্যালায়েন্সের (উত্তরের জোট) আমরুল্লাহ সালেহর বড় ভাই রুহুল্লাহ সালেহ্। অবশ্য, তার মৃত্যুর খবর এখনো নিশ্চিত নয়। ইরানের একটি সংবাদমাধ্যমের তরফে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাঞ্জশির উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় এখনো তালেবান ও উত্তরের জোটের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেও আমরুল্লাহর লোকজনের সাথে তালেব যোদ্ধাদের লড়াই হয়েছে। ওই সময়ে পাঞ্জশির ছেড়ে কাবুলে যাওয়ার পথেই তালেবানের আক্রমণে নিহত হন রুহুল্লাহ।
এছাড়া তালেবান নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে, কয়েক দিন আগে পাঞ্জশির ঘাঁটির যে গ্রন্থাগার থেকে ভিডিও বার্তা দিয়েছিলেন আমরুল্লাহ, সেটিও দখল করে নিয়েছে তালেবরা।
গত সোমবার সকালে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, উত্তরের জোটের মুখপাত্র তথা মাসুদের সহযোগী ফাহিম দাস্তি নিহত হয়েছেন। তালেবান মুখপাত্র জবিরুল্লা মুজাহিদ দাবি করেন, পাঞ্জশিরে মাসুদের বাড়িও দখল নিয়েছেন তারা। এই দাবির পক্ষে ছবি এবং ভিডিওও প্রকাশ করে তালেবান।
তাতে দেখা যায়, মাসুদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তালেবান যোদ্ধারা। দাস্তি ছাড়াও পাঞ্জশিরে সোমবার তালেব বাহিনীর সাথে লড়াইয়ে নিহত হয়েছেন মাসুদের আত্মীয় আমির সাহিব আহমদ মাসুদ এবং উত্তরের জোটের অন্যতম কমান্ডার সাহিব আব্দুল ওয়াদুদ জোহর। দিন তিনেক আগে এক তালেবান মুখপাত্র দাবি করেছে, উপত্যকা ছেড়ে পালিয়ে তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন আমরুল্লাহ।
# সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা