দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম ছাদ বাগান অথবা বাসা-বাড়ির ফুলের টব যেন এডিস মশার প্রজননস্থলে পরিণত না হয়, এই বিষয়ে নগরবাসীকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়েছেন।
আজ বুধবার (২৫ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সারাদেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কার্যক্রম পর্যালোচনার ১১তম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এই আহবান জানান তিনি।
এসময়, ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে জাতীয় নির্দেশকার মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর একটু আগেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে, পরিমাণও বেশি এবং থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে যেখানে সেখানে পানি জমছে। আবার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় নিয়মিত পরিষ্কার করতে না পারায় এসব স্থাপনায় মশার প্রজনন হচ্ছে। ছাদ বাগান বা ফুলের টবে নিয়মিত পানি অপসারণ করতে না পারলে মশার কীটনাশক অথবা কেরোসিনের তেল ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।
মো. তাজুল ইসলাম আরো বলেন, নিজের বাসা মশামুক্ত রাখার পরেও পাশের বাসার এডিস মশার কামড়ে কেউ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হবে অথবা মৃত্যুবরন করবে এটা মেনে নেয়া হবে না। প্রতিটি মৃত্যুই দুঃখজনক, একটি মৃত্যুকেও ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তাই নগরবাসীকে এব্যাপারে আরো বেশি সচেতন হওয়ার আহবান জানান তিনি। ডেঙ্গু রোগে যাতে একটি মানুষও মৃত্যুবরণ না করে সেটা আমাদের সবারই কাম্য। অনেক অভিজাত ও শিক্ষিত লোকের বাসায় মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
মন্ত্রী বলেন, এডিস মশা নিধনে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করে যে কোনো কোম্পানি কার্যকর কীটনাশক আমদানি করতে পারছে।আগে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান কীটনাশক আমদানি করতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই ধারা ভেঙ্গে দিয়ে এখন অনেক কোম্পানিকে কীটনাশক আমদানি করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এসব কীটনাশক সহজলভ্য করার জন্য বাজারে ওপেন করে দেয়া হচ্ছে।
এলাকা বিশেষে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অথবা ক্লিনিকে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হওয়া মাত্রই মন্ত্রণালয় অথবা সিটি কর্পোরেশনকে জরুরি ভিত্তিতে জানানোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। যাতে খবর পাওয়া মাত্রই সেই বাড়িসহ আশপাশে বিশেষ অভিযান চালানো সম্ভব হয়।
ঢাকা ক্যান্টমেন্ট বোর্ড, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ রেলওয়ের অধিক্ষেত্রে মশার বংশ বিস্তার রোধে কার্যকর গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে বসে না থেকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে বলেন। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মশা নিধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সংরক্ষিত এলাকায় মশার লার্ভা পাওয়া গেলে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানকে দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।
মশকনিধন দপ্তর/অধিদপ্তরের পরিকল্পনা আছে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন মশকনিধন অধিদপ্তর নিয়ে সরকার এখন ভাবছে না। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, ফাইলেরিয়া, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বরসহ বিভিন্ন কীটবাহিত সংক্রামক রোগের বিস্তার ও প্রতিরোধে ‘ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট সেল’ বা রোগ সংক্রামক কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনা সেল গঠন করার কাজ চলছে। এডিস মশা এবং ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে শুধু রাজধানী বা মহানগরী নয় দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষকে মশামুক্ত রাখতে ইন্টিগ্রেটেড ভেক্টর ম্যানেজমেন্টের কাজ শুরু করেছি।
সভায় ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, গাজীপুর মেয়র মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এসডিজি সমন্বয়ক, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
# প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।