দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
অবশেষে আলোচিত রাজশাহীর আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলীর বাড়িতে রাতভর অভিযান চালিয়ে পুলিশ অস্ত্র, গোলাবারুদ, প্রায় কোটি টাকা, সাড়ে ১৭ লাখ টাকার দুইটি চেক ও মাদক উদ্ধার করেছে। পুলিশ মেয়র মুক্তার আলীকে না পেয়ে তাঁর স্ত্রীসহ তিনজনকে আটক করেছে।
গত মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) দিবাগত রাতে রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। পুলিশের এই অভিযানে মেয়রের স্ত্রী জেসমিন খাতুন, ভাতিজা সোহান ও শান্তকে আটক করা হয়েছে।
আর উদ্ধার করা হয়েছে একটি পিস্তল, তিনটি ওয়ান শুটার গান, ৪৩ টি তাজা গুলি, ব্যবহৃত গুলির খোসা ৪টি,নগদ ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, ১৬ লাখ ও দেড় লাখ টাকার দুটি চেক, ইয়াবা ২০টি, গাঁজা ১০ গ্রাম, হেরোইন ৭ গ্রাম উদ্ধার করা হয়েছে। আর এই বিষয়ে অস্ত্র ও মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে।
আজ বুধবার (৭ জুলাই) রাজশাহীর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইফতেখায়ের আলম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মঙ্গলবার রাতসাড়ে ৮ টায় আড়ানী পৌরসভার মেয়র মুক্তার আলী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও প্রতিবেশি কলেজ শিক্ষক মনোয়ার হোসেন মজনুর বাসায় ঢুকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের সামনে নির্মমভাবে পিটিয়ে ওই শিক্ষককে হাত ভেঙ্গে দেন এবং তার বাসায় ভাঙচুর করেন। পরে ওই অভিযোগে গত মঙ্গলবার রাত ১২টার পর বাঘা থানায় পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ ওইরাতে সফল অভিযান চালায়।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে মেয়র মুক্তার আলী কয়েকজন লোককে নিয়ে আড়ানী দক্ষিণ পাড়ায় কলেজ শিক্ষক মনোয়ার হোসেন ওরফে মজনুর বাড়িতে যান। তাঁকে মারধর করেন। তাঁর ছেলে নাফিস সাদিক ও স্ত্রী দিলরুবা বেগম বাধা দিলে মেয়র ছেলেকে মারধর করেন। কলেজ শিক্ষকের স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। এরপর আহত মনোয়ার হোসেনকে রাতেই বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। রাত ১২টার পর তিনি বাদী হয়ে বাঘা থানায় একটি মামলা করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনোয়ার হোসেন আজ বুধবার সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি একজন পল্লিচিকিৎসক হিসেবে বাসার নিচতলায় চেম্বারে বসে রোগী দেখেন। সেখানেই মেয়র এসে হামলা চালান। তিনি বলেন, এক দিন শুধু মেয়রের কার্যালয়ে একটি কাগজ নিতে গিয়েছিলেন।
এ ছাড়া মেয়রের সঙ্গে তাঁর কোনো দিন কথা হয়নি। গত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকে ভোট করেছিলেন। আর মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। এ কারণে তাঁর ওপর মেয়রের রাগ থাকতে পারে। এ ছাড়া তিনি অন্য কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।
বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বুধবার সকালে গণমাধ্যমকে অভিযানের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অভিযান চালানোর সময় মেয়র বাড়িতে ছিলেন না। #