দূরবীণ নিউজ ডেস্ক :
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদারকে সালিশে গিয়ে এক কিশোরীকে বিয়ে করার অপরাধে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
আজ সোমবার ( ২৮ জুন) রাতে স্থানীয় সরকার বিভাগ তাকে বরখাস্তের নির্দেশ জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরীকে বিয়ে করায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এ কারণে ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
কেন তাকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তা এ চিঠি পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে গত শুক্রবার সালিশ গিয়ে প্রেমের টানে বাড়ি ছাড়া ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে পছন্দ করে বিয়ে করে ফেলেন এ ইউপি চেয়ারম্যান (৬০)। পরের দিন শনিবার তাকে আবার তালাকও দিয়ে দেন।
এ ঘটনায় সোমবার তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। মামলায় সালিশে পছন্দ হওয়ায় কিশোরী মেয়েকে জোর করে বিয়ে, পরে তালাক দেওয়া এবং কিশোরীর প্রেমিক রমজান হাওলাদারকে মারধর ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।
রমজানের বড় ভাই মো. আল ইমরান বাদী হয়ে পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আমলি আদালতে মামলাটি করেন। বিচারক মো. জামাল হোসেন মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রধানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
মামলাটির অন্য আসামিরা হলেন, শাহাবুদ্দিন হাওলাদার, পলাশ হাওলাদার, সুজন হাওলাদার, নূরুল আমিন বাবু, আবু সাদেক ও মো. আইয়ুব।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আল-আমিন বলেন, অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। মেয়েটি নাবালিকা জেনেও তিনি জোর করে বিয়ে এবং রমজানকে হত্যার উদ্দেশে মারধর করেন। পরে বিষ খাইয়েও হত্যার চেষ্টা চালান।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হলে চেয়ারম্যান মেয়েটিকে তালাকও দিয়ে দেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান শাহীন হাওলাদার ও তার পাঁচ সহযোগী এবং নিকাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী মো. আইয়ুবকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে রোববার এ ঘটনা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক, জেলা নিবন্ধক ও পিবিআইকে বিষয়টি তদন্ত করে পৃথক প্রতিবেদন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, হাইকোর্টের আদেশের কথা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছেন। কিন্তু হাইকোর্টের ওই আদেশের কপি এখনও তাদের কাছে পৌঁছেনি।
#