দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে এখনই সচেতনতা জোরদার করা না গেলে বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বনলতা ও ইসলামবাগ কাঁচা বাজারের টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যগণ।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশন (গেইন -GAIN) বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় ‘কাঁচা বাজারে পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য সরবরাহ এবং বাজারে কোভিড-১৯ এবং ব্ল্যাক ফাঙ্গাস মোকাবেলায় করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তাগণ এই মন্তব্য করেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দুপুরে নগর ভবনের শীতালক্ষ্যা হলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বনলতা ও ইসলামবাগ কাঁচা বাজারে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত “টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপের” তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, “ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কোনো সংক্রামক ব্যাধি নয়। চলমান অতিমারির এই সময়ে যারা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত, এই ছত্রাক তাদের জীবনকে অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে এবং অনেক সময় জীবনহানির কারণও হতে পারে।
কিন্তু কোভিড-১৯ প্রতিরোধে প্রযোজ্য স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার মাধ্যমে ব্লাক ফাঙ্গাস বহুলাংশে এড়ানো যায়। তাই ব্লাক ফাঙ্গাস নিয়ে আমাদের সচেতনতা সৃষ্টি করা খুবই জরুরী। না হলে করোনা মহামারির সাথে সাথে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসও বড় বিপদ হয়ে দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।”
বক্তাগণ বলেন, “সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রে প্রথম সনাক্ত হওয়া এই ছত্রাক পর্যায়ক্রমে গুজরাট, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গসহ পুরো ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশেও এই ছত্রাক শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু দেশের সর্বত্র এই ছত্রাকের ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে আমাদের সবাইকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। আমাদের অবহেলা মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।”
বক্তারা বলেন, “ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের খাদ্য শৃংখলকে নিরাপদ ও পুষ্টিকর করতে হবে। সেজন্য কাঁচা বাজারগুলোকে যেমন স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, তেমনি খাদ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় ভেজাল দূরীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।”
সভায় খাদ্য শৃংখল নিরাপদ করা এবং ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মতো নতুন নতুন সংক্রমণ মোকাবিলা করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন।
মত বিনিময় সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ বলেন, “দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি অত্যাধুনিক ল্যাব আছে। আমাদের খাদ্য সংগ্রহকারীরা বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। সেগুলো ল্যাব পরীক্ষায় ভেজাল হিসেবে চিহ্নিত হলে তা আমাদের নগর ভবনের বিশেষ খাদ্য আদালতে আমরা মামলা করছি এবং সেখান থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য যে, গেইন বাংলাদেশ ‘ইটসেইফ’ (EatSafe) প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষিণ সিটির ইসলামবাগ ও বনলতা কাঁচা বাজারে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সাথে একযোগে কাজ করে চলেছে।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এর সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে এবং ইটসেইফ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসাইন এর সঞ্চলনায় অন্যান্যের মধ্যে ডিএসসিসির অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী পরিচালক মো. বাবর আলী মীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান, ডিএসসিসির ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফেরদৌস আলম, বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রতিনিধি এবং ভোক্তা প্রতিনিধিগণ সভায় তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।