দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
বহুল আলোচিত ধর্মীয় বক্তা মুফতি আমির হামজাকে ৫ দিনের রিমান্ড শেষে তার জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (৩১ মে) পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি সংসদ ভবনে তলোয়ার নিয়ে হামলার পরিকল্পনার মামলায় স্বেচ্ছায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মোরশেদ আল মামুন ভূঁইয়া তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
গত ২৫ মে আমির হামজাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর সংসদ ভবনে হামলার পরিকল্পনায় শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক কাজী মিজানুর রহমান। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৪ মে বিকেলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ডাবিরাভিটা এলাকার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হামজাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সিটিটিসির একটি দল।
সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমির হামজার বিরুদ্ধে সিটিটিসির তদন্তাধীন একটি মামলা রয়েছে।
পুলিশের দাবি, আমির হামজা ওয়াজ মাহফিলের নামে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন। ইউটিউবে ছড়ানো তার বেশকিছু বক্তব্য উগ্রবাদে উসকানিমূলক, যা শুনে কিশোর-তরুণরা জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হচ্ছে। সম্প্রতি নাশকতার মামলায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হলে আত্মগোপনে চলে যান আমির হামজা।
সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলা চালানোর চেষ্টায় গত ৫ মে সাকিব নামে একজনকে আটক করা হয়। সাকিবকে আটকের পর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় সাকিব ছাড়াও আলী হাসান ও মাহমুদুল হাসান গুনবী নামে দুজনকে আসামি করা হয়।
সাকিবের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাকিব কথিত বক্তা আলী হাসান উসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী, আমির হামজা, হারুন ইজহার প্রমুখের উগ্রবাদী-জিহাদি হামলার বার্তাসংবলিত ভিডিও দেখেন এবং উগ্রবাদে আসক্ত হন।
কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক ভাষায় ওয়াজকারী আমির হামজার জন্ম ১৯৯১ সালে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া থেকে আল-কোরআনের ওপর অনার্স ও মাস্টার্স করেন তিনি।
গত বছর দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর আমির হামজা ক্রমাগতভাবে মাস্ক না পরতে উৎসাহ দিয়ে আসছিলেন। তিনি বলেন, ‘করোনা এসেছে ইসলামে অবিশ্বাসীদের শায়েস্তা করতে’। তিনি এমনও বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে কারও করোনা হবে না।’
#