দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ওসি প্রদীপসহ ২৮ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কক্সবাজারের টেকনাফে ‘সাদ্দাম হোসেন নামের এক যুবক কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনায় এই অভিযোগ দায়ের করা হয়। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ঘটনাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (টেকনাফ-২) এর বিচারক মো. হেলাল উদ্দিনের আদালতে নিহতের মা গুল চেহেরা বাদী হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী মো. আব্দুল বারী।
মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমানসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ২৭ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
অন্য আসামিরা হলেন- এএসআই মো. আরিফুর রহমান, এসআই সুজিত চন্দ্র দে, এসআই অরুণ কুমার চাকমা, এসআই মো. নাজিম উদ্দিন ভুঁইয়া, এসআই নাজিম উদ্দিন, এসআই কামরুজ্জামান, এএসআই মো. আমির হোসেন, এএসআই কাজী সাইফুদ্দিন, এএসআই নাজিম উদ্দিন, এএসআই মাঈন উদ্দিন, এএসআই মাজাহারুল ইসলাম, এএসআই নঈমুল হক, এএসআই মিশকাত উদ্দিন, এএসআই রামধন চন্দ্র দাশ, কনস্টেবল সাগর দেব, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, কনস্টেবল আবু হানিফ, কনস্টেবল মো. শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল মো. আজিজ, কনস্টেবল দ্বীন ইসলাম, কনস্টেবল মো. বোরহান, কনস্টেবল মো. জসিম উদ্দিন, কনস্টেবল আব্দুল শুক্কুর, কনস্টেবল মো. শেকান্দর, কনস্টেবল মহি উদ্দিন এবং টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার নুরুল আমিন ওরফে নুরুল্লাহ দফাদার।
এসব আসামিদের মধ্যে নুরুল আমিন ছাড়া অন্যরা হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ি এবং টেকনাফ থানায় কর্মরত রয়েছেন। বাদী গুল চেহেরা টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার সুলতান আহমদ ওরফে বাদশার স্ত্রী।
বাদীর আইনজীবী মো. আব্দুল বারী বলেন, ‘‘গত ৪ জুলাই বাদী গুল চেহেরার ছেলে সাদ্দাম হোসেন ও মো. জাহেদ হোসেনকে পুলিশ বাড়ি থেকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তাদের ছেড়ে দিতে পুলিশ ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা দেওয়া না হলে তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
‘পরে স্বজনরা জমি-জমা ও স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে পুলিশকে পাঁচ লাখ টাকা দেন। পরে মো. জাহেদ হোসেনকে গত ৬ জুলাই একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। টাকা দেওয়ার পরও সাদ্দাম হোসেনকে ছাড়া হয়নি।’
বাদীর এ আইনজীবী বলেন, ‘গত ৭ জুলাই গভীর রাতে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কম্বোনিয়া বড়ছড়া এলাকায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে সাদ্দাম হোসেন ও আব্দুল জলিল নামের দুইজন গুরুতর আহত হন বলে পুলিশ দাবি করে। এ ঘটনায় তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকের বরাতে মৃত্যু দেখানো হয়েছে।’
এ ঘটনায় নিহত সাদ্দাম হোসেনের মা গুল চেহেরা বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমানসহ ২৮ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন।
আব্দুল বারী বলেন, ‘আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ঘটনাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্তকারি কর্মকর্তার প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর ঘটনার সত্যতা পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সূত্র: রাইজিং বিডি।