দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০ দিনব্যপী চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে। শনিবার (৪ জুলাই) থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৪টি ওয়ার্ডে একযোগে ১০ দিনব্যপী চিরুনি অভিযানের প্রথম দিন অতিবাহিত করেছে ডিএনসিসি। এর আগে গত ৬ জুন থেকে ১৫ জুন বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বেশ সফলতা এসেছে বলে জানা যায়।
ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্ততে এই তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে,শনিবার সকাল ১০টা থেকে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে একযোগে বিশেষ এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে মোট ১২ হাজার ৬১৯ টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ৯১ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৮ হাজার ৭৬৪ টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এসময়ে ১২ টি মামলায় মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অন্যান্য বাড়ি ও স্থাপনার মালিককে সতর্ক করা হয়েছে।
শনিবার উত্তরা অঞ্চল-১ এর অধীনে মোট ৬৭২ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৭ টিতে এডিস মশার লার্ভা লার্ভা পাওয়া গেলে ২টি মামলায় মোট ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ৫২০ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। সেখানে ১০টি বাড়িকে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
মিরপুর অঞ্চল-২ এর অধীনে মোট ২ হাজার ৬১৮টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১টিতে এডিস মশার লার্ভা লার্ভা পাওয়া যায় এবং ১ হাজার ৩০৯ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৭টি মামলায় মোট ১লক্ষ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মহাখালী, অঞ্চল-৩ এর অধীনে মোট ১ হাজার ৫৩০ টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩১ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ৯৫০ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
মিরপুর ১০, অঞ্চল-৪ এর অধীনে মোট ১হাজার ৬০৪টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৯টিতে এডিস মশার লার্ভা লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ১হাজার ১৭১টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
কারওয়ান বাজার, অঞ্চল-৫ এর অধীনে মোট ২ হাজার ১৯টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ১২টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এসময়ে ৩টি মামলায় মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। আরেকটি খালি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়ের ভেতরে লার্ভা পাওয়া যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ১ হাজার ৫৮২টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। সেসব স্থানে কীটনাশক ছিটানো হয়েছে।
হরিরামপুর, অঞ্চল-৬ এর অধীনে মোট ১হাজার ৪৩৪ টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৭ টিতে এডিস মশার লার্ভা লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ১হাজার ১৩১ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
দক্ষিণখান অঞ্চল-৭ এর অধীনে মোট ৯৩৭টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ২ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৭৯৫ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
উত্তরখান অঞ্চল-৮ এর অধীনে মোট ৭৫৩ টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ২টি স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। তবে ৪৮২ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
ভাটারা অঞ্চল-৯ এর অধীনে মোট ৪৮৬ টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৫ টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ৩৬৪ টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
সাঁতারকুল অঞ্চল-১০ এর অধীনে মোট ৫৬৬টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৪৬০টি বাড়ি/ স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। উল্লিখিত সকল সম্ভাব্য এডিস মশার প্রজন স্থলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনাপূর্বক কীটনাশক ছিটানো হয়েছে এবং জনসাধারণকে এবিষয়ে পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে অভিযান পরিচালনার লক্ষ্যে এবারও প্রতিটি ওয়ার্ডকে ১০টি সেক্টরে ভাগ করে প্রতিটি সেক্টরকে ১০টি সাবসেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি ওয়ার্ডের ১টি সেক্টরে অর্থ্যাৎ ১০টি সাবসেক্টরে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। চিরুনি অভিযানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ৬ জন চিকিৎসক, ৯ জন কীটতত্ববিদ, ডিএনসিসির ৩ জন কীটতত্ববিদ এবং ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাগণ প্রত্যক্ষভাবে কাজ করছেন। দীর্ঘমেয়াদি আধুনিক ব্যবস্থাপনার অংশ হিসাবে গতবারের মত এবারও এডিসের লার্ভা প্রাপ্তির স্থানসমূহ এবং প্রজনন উপযোগী পরিবেশসমূহের তথ্য অ্যাপে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ের ১০ দিনব্যাপী (৬-১৫জুন) চিরুনি অভিযানে ডিএনসিসির ৫৪টি ওয়ার্ডে মোট ১ লক্ষ ৩৪ হাজার ১৩৫টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করে মোট ১ হাজার ৬০১টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৮৯ হাজার ৬২৬টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এসময়ে মোট ২১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে ডিএনসিসির চিরুনি অভিযান আগামীকালও অব্যাহত থাকবে। # প্রেস বিজ্ঞপ্তি।