দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হকের শ্রমিক ছাঁটাই বিষয়ক বক্তব্যকে আন্তর্জাতিক শ্রম আইন বিরোধী বলেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের নেতারা । তারা বলেছেন, দুর্যোগকালে শ্রমিক ছাঁটাই করা যায় না। এ ব্যাপারে আইএলও কনভেনশনসহ সুনির্দিষ্ট আন্তর্জাতিক ও জাতীয় আইন আছে।
রোববার (৭ জুন) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, বিজিএমইএ সভাপতির ব্যাপকহারে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সাম্প্রতিক হুমকি ‘চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ ও ‘উসকানিমূলক’। মার্চ মাস থেকেই গার্মেন্টস শ্রমিকদের ছাঁটাই করা শুরু হয়েছে। শ্রমিক ছাঁটাই চলছেই। তারপরও যখন আনুষ্ঠানিকভাবে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়, তখন বোঝা যায় এর পিছনে দুরভিসন্ধি রয়েছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, সরকার শ্রমিকের স্বার্থ পদদলিত করে মালিকের মুনাফার স্বার্থ রক্ষা করছে। আর তাই বিজিএমইএ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ‘হুমকি’ দেওয়ার স্পর্ধা দেখাচ্ছে। সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে বিজিএমইএ শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। এই খেলা অচিরেই শেষ করতে হবে। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের যেকোনো চক্রান্ত রুখে দিতে হবে।
তারা আরো বলেন, লুটেরাদের পালানোর সব পথ দেশবাসী বন্ধ করে দেবে। মালিকদের অন্যায় আবদার মেটাতে সরকার নতজানু থাকলেও, শ্রমিক শ্রেণি মতলববাজ মুনাফা লোভীদের আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করবে। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরিণতি হবে ভয়াবহ যা বিজিএমইএ ও সরকারের কল্পনার বাইরে।
ন্যাপ নেতৃদ্বয় বলেন, করোনা-মহাসংকটে গার্মেন্টস মালিকরা মুনাফার স্বার্থে ছুটির মধ্যেও গার্মেন্টস চালু রেখে শ্রমিকদের মৃত্যু ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে। গার্মেন্টস মালিকরা চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে হাজার হাজার শ্রমিককে শতশত মাইল পায়ে হেঁটে আসতে বাধ্য করেছিল। ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে অসহায় শ্রমিকদের আবার বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা না করেই গার্মেন্টস খুলে দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিককে মৃত্যুকূপে ঠেলে দিয়েছে গার্মেন্টস মালিকরা। ফলে গার্মেন্টস শ্রমিকরা ব্যাপকভাবে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। ‘অর্ডার বাতিল হয়ে যাবে’ এই যুক্তি দেখিয়ে গার্মেন্টস চালু করা হয়েছিল। আর এখন ব্যাপক হারে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে অর্ডার না থাকার কথা বলা হচ্ছে। এগুলো মালিকদের দ্বীচারি চরিত্রর বহি:প্রকাশ।
তারা বলেন, শ্রমিকদের বেতন দিতে যেন সুবিধা হয় সেজন্য সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৪ হাজার ৯০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। বাতিল হওয়া রফতানি কার্যাদেশ বৈদেশিক ক্রেতারা পুনর্বহাল করেছেন। এ অবস্থায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ছাঁটাইয়ে বিজিএমইএ সভাপতির ঘোষণা উদ্দেশ্যমূলক। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘোষণা শ্রমিক নির্যাতনের একটি বিশেষ হাতিয়ার।
বিবৃতিতে শ্রমিকদের নিয়ে মালিকদের ছিনিমিনি খেলার বিরুদ্ধে সরকারের সুনির্দিষ্ট বক্তব্য ও অবস্থান জনগনের নিকট পরিষ্কার করার দাবী জানান নেতৃদ্বয়।# প্রেস বিজ্ঞপ্তি ।