বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ১০০ কোটি টাকার প্রণোদনার দাবি ডিজিটাল স্কুল সোসাইটির
দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক:
বাংলাদেশে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষায় সরকারের পাশাপাশি ব্যাক্তিমালিকানাধীন পরিচালিত কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি স্কুলগুলি শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে প্রায় ৬ লাখ। লেখাপড়া করছে প্রায় ১ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী।
দেশের প্রাথমিক শিক্ষার প্রায় শতকরা ৩০ ভাগ চাহিদা বেসরকারি স্কুলগুলো পূরণ করে থাকে। অথচ সরকারি কোনো প্রকার সাহায্যা ছাড়াই শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের মাসিক ফি দিয়েই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হচ্ছে। অপরদিকে স্কুলগুলোর প্রায় ৯৯ শতাংশ ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত। মাসিক সম্পূর্ণ আয়ের ৩০ শতাংশ ঘর ভাড়া, ৫০ শতাংশ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা, বাকি ২০ শতাংশ বা তারও বেশি গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়ে যায়।
কিন্তু বর্তমানে করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি ঘোষণা মোতাবেক বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে বন্ধ রয়েছে শিক্ষার্থীদের বেতন আদায়। চরম বাস্তবতায় বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যক্তিমালিকানাধীন পরিচালিত দেশের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক-কর্মচারীরা পরিবার পরিজন নিয়ে চরম আর্থিক কষ্টে দিনযাপন করছেন।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় সারাদেশে সকল কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য ১০০ কোটি টাকার প্রণোদনা চেয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর আবেদন করেছেন বাংলাদেশ ডিজিটাল স্কুল সোসাইটির (বিডিএসএস) চেয়ারম্যান এবং মিরপুর ইংলিশ ভার্সন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ইয়াহিয়া খান রিজন। সংগঠনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত এবং নিবন্ধনকৃত বাংলাদেশ ডিজিটাল স্কুল সোসাইটি (বিডিএসএস)। ডিজিটাল শিক্ষা বাস্তবায়নে সরকারের নেয়া প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে একাতœতা ঘোষণা করে শিক্ষদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিডিএসএস।
সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ইয়াহিয়া খান রিজন প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদনে বলেন, সম্পূূর্ণ বেসরকারি উদ্যেগে নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত সারাদেশে প্রায় ৬০ হাজারের বেশি কিন্ডারগার্টেন স্কুল রয়েছে। চলমান অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে বন্ধ হয়ে যাবে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে আর্থিক টানাপোড়নে দিশেহারা হয়ে যাবেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
অথচ শিক্ষার সম্প্রসারণে ব্যক্তিমালিকানাধীন স্কুলগুলো যদি না থাকতো তাহলে সরকারকে আরো ২৫ থেকে ৩০ হাজার বিদ্যালয় স্থাপন করে প্রতি মাসে শিক্ষক-কর্মচারী বেতন বাবদ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হতো। বাংলাদেশ ডিজিটাল স্কুল সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ রিজন খান আবেদনে আরও বলেন, দেশের করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে তার ভাষণে শুনিয়েছে আশার বাণী, দিয়েছেন প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা।
শুধু তাই নয় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের অসহায় জনগণকে দিচ্ছেন প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রীও। কিন্তু মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে সমাজে পরিচিত শিক্ষকগণ সম্মানের কথা চিন্তা করে ত্রাণের জন্য লাইনেও দাঁড়াতে কিন্তু মানুষ পারছেন না। প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে দিচ্ছেন প্রণোদনা। সেখানে সমাজের প্রায় সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অন্তর্ভুক্ত হলেও শিক্ষাখাত এখনো বাইরে রয়ে গেছে। ফলে চরম বাস্তবতায় রীতিমত এক কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে পড়েছেন এই খাত সংশ্লিষ্ট দেশের শিক্ষক-কর্মচারীরা।
চলমান করোনাভাইরনাসের প্রাদুর্ভাবে যদি সেপ্টম্বর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক সংকট চরম আকার ধারণ করবে। তাই আসন্ন ঈদুল ফিতর উদ্যাপন এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখার স্বার্থে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদানের মানবিক আবেদন জানাচ্ছি। যা উৎপাদনমুখী ও অন্যান্য খাতের মতো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। # কাশেম