দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি :
সিজারে সন্তান অপারেশনকালে ‘শারমিন আক্তার শিলার’ পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় মৃত্যুর পথযাত্রী ওই ভিকটিমকে দ্রæত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালত একই সঙ্গে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিভিল সার্জনকে ওই রোগীর উন্নত চিকিৎসার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া উক্ত ঘটনা তদন্ত করে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৮ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বে এ আদেশ দেন।
হাইকোর্ট সংশ্লিষ্টদের প্রতি কয়েকটি রুল জারি করেন। এরমধ্যে মৃত্যুপথযাত্রী রোগী ‘শারমিন আক্তার শিলাকে’ পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিদেশ কেন দেওয়া হবে না, তার জবাব চেয়েছেন। পাশাপাশি ওই রোগীর চিকিৎসায় অবহেলার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ কেনো দেওয়া হবে না, তার জবাবও চেয়েছেন।
বুধবার হাইকোর্টে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট জীবন নেছা মুক্তা, অ্যাডভোকেট সাকলান ইমন ও ফারিয়া জামান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান দাউদ।
ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন,গত ১৬ এপ্রিল রাতে সিজারের মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার বাসিন্দা জিয়াউল হাসানের স্ত্রী শারমিন আক্তার শিলা। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর থেকে পেটে ব্যাথা অনুভব করছিলেন তিনি। এ জন্য সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাকে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার কিছু দিন পর পেটে প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। ফুলে যায় পেট। ২১ মে পেট ফুটো হয়ে পুজ বের হয়। তাৎক্ষণিক ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানে ২২ মে পুনরায় অপারেশন করা হয়।
ওই সময় রোগী ‘শারমিনের বাবা আব্দুর রব সিকদার সংশ্লিষ্টদের বলেন, সরকারি হাসপাতালে মেয়ে এনে ভর্তি করিয়েছি সুচিকিৎসা পাওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানে ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ে মরতে বসেছে। এভাবে হলে মানুষ যাবে কোথায়? আমি বিচার চাই এই অপচিকিৎসা দেওয়া ডাক্তারের।
তিনি বলেন, অপারেশনের পর যখন আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন শেবাচিম হাসপাতালেই মেয়েকে দেখাই। সেখানে বলে নাড়ি প্যাঁচ পড়েছে। ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে। তারা নতুন করে ওষুধ দেন। কিন্তু মেয়ে সুস্থ হয় না। এক পর্যায়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে একটি বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা করালে সেখানের চিকিৎসক জানান পেটে গজ রয়েছে দ্রæত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য। শেষে হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি করালে ২২ মে সকালে অপারেশন করা হয়।
পুনরায় অস্ত্রোপচার করে গজ বের করা শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. নাজিমুল হক তখন বলেন, দীর্ঘদিন গজ থাকায় পেটের ভেতরে পচন ধরে নাড়ি ফুটো হয়েছে। অপারেশন করা হয়েছে। তার সার্বিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। #