সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং এ্যাডভোকেট তৌফিকা করিম এবং মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ নেতাসহ অরো বেশ কযজনের বিরদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ বিভাগ।
অভিযোগ রয়েছে, আনিসুল হক মন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রচুর পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি নিজ নামে কসবা, ত্রিশাল এবং পূর্বাচলে ৬.৮০ একর জমি ক্রয়, সিটিজেন ব্যাংক, এক্সিম বাংলাদেশে শেয়ারের পরিমাণ ৪০.১০ কোটি, সঞ্চয়পত্র, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা এবং অন্যান্য বিনিয়োগ ২৩ কোটি ২৬ লাখ ৭৯ হাজার ৮৮৪ টাকা, ৪টি গাড়ি ১টি মটরসাইকেল রয়েছে টাকা।
এছাড়াও এ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমের নামে-বেনামে দেশে-বিদেশে অঢেল সম্পদ রয়েছে। তৌফিকা করিম সিটিজেন চার্টার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিল বিধায় তার মাধ্যমে আনিসুল হক কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করতেন।
তিনি নিম্ন আদালতের অধিকাংশ কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রতি ১০/১৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করতেন। তার সকল দুর্নীতির সাথে তৌফিকা করিম এর সংশ্লিষ্টতা ছিল মর্মে গোপনীয় তথ্যানুসন্ধানকালে সোর্স মূলে জানা যায়। জনাব আনিসুল হক ও এ্যাডভোকেট তৌফিকা করিম ও তার অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের নামে-বেনামে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন মর্মে জানা যায়।
এছাড়াও বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন মর্মে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
অভিযুক্ত (১) মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ, (২) তার স্ত্রী ও মুন্সিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগসাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সোহানা তাহমিনা, (৩) মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনিসউজ্জামান আনিস, (৪) মুন্সীগঞ্জ জেলার মীরকাদিম পৌরসভা সাবেক মেয়র মোঃ শহিদুল ইসলাম শাহিন এবং (৫) মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি আফসার উদ্দিন ভূঁইয়া আফসুর বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুর করছে দুদক।
মহিউদ্দিন আহম্মেদ ৪টি রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর মালিক এবং তার স্ত্রী সোহানা তাহমিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি, জমিদখল ও অন্যান্যভাবে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন।
তার অবৈধ সম্পদসমূহ হলো: মোহাম্মদপুর ইকবাল রোড এ ব্লক, বাসা নং-১১/১ (ফ্ল্যাট নং-৭/এ) ঠিকানায় ১৭৪.৯০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট ক্রয়, যার মূল্য ৭৫ লক্ষ টাকা; ১৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ১টি ল্যান্ড ক্রুজার টয়োটা গাড়ি ক্রয়। এছাড়া তাদের আরও অনেক সম্পদ নামে-বেনামে রয়েছে।
আনিসুজ্জামান আনিসের শহরস্থিত ৩৯৬০ বর্গফুট বিশিষ্ট ‘মুন্সিগঞ্জ টাওয়ার’ নামীয় ০৫ তলা ভবনসহ মুন্সিগঞ্জের কোর্টগাঁও মৌজায় ০২ তলা বভন নির্মাণ করেন। তার ২০২৩-২৪ আয়কর নথিতে নীট সম্পদের মূল্য ৯৩ লাখ ৩৯ হাজার ৬৫২ টাকা। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অপর ব্যক্তি মো: শহিদুল ইসলাম শাহিন মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভার গোয়ালঘুন্নী এলাকায় ৫ তলা বহুল ভবন নির্মাণ করেন।
এছড়া অভিযোগ সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি আফসার উদ্দিন ভূইয়ার বিরুদ্ধে সোয়া ৪ কোটি টাকার সেতু নির্মাণের অনিয়মের তথ্য পাওয়া যায়। সেতু নির্মাণের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট আফসার উদ্দিন ভূইয়ার সংশ্লিষ্টতার সত্যতা তথ্যানুসন্ধানকালে পাওয়া যায়। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিজ ও তাদের উপর নির্ভরশীলদের নামে প্রচুর জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন মর্মে জানা যায়। গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে সঠিক পরিলক্ষিত হওয়ায় প্রকাশ্য অনুসন্ধানের জন্য কমিশন কর্তৃক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।