বহু আলোচনা ও উৎকণ্ঠার পর অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। যাকে নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। কে এই সম্রাট? কিভাবে তার উত্থান? ইত্যাদি সব সংবাদ ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। এরই মধ্যে জানা গেছে সম্রাটের তিনজন স্ত্রীর খবর। যাদের মধ্যে একজন সিঙ্গাপুরের নাগরিক বলেও পারিবারিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানা যায়, বাংলাদেশী দুই জন স্ত্রীর মধ্যে ১ম পক্ষের স্ত্রী বাড্ডায় থাকেন। এ সংসারে সদ্য পড়াশুনা শেষ করা সম্রাটের এক মেয়ে রয়েছে। তবে সম্রাট ১ম স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন না। তিনি থাকতেন দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে মহাখালীর ডিওএইচএস’র বাসায়। এ সংসারে তার একমাত্র ছেলে মালয়েশিার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।
এদিকে গত দুই বছর ধরে মহাখালিতে ২য় স্ত্রীর বাসায়ও যেতেন না। তিনি কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে নিজ কার্যালয়ে থাকতেন। তবে গাড়ির চালকের খরচসহ পরিবারের সব খরচ দিতেন। সিঙ্গাপুরে সম্রাটের সেদেশের নাগরিক এক স্ত্রী থাকলেও সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সম্রাটের আরও দুই ভাই রয়েছে। এক ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন। আরেক ভাই সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। সম্রাটের মা ভাইদের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। সম্রাটদের গ্রামের বাড়ি ফেনীতে।
এদিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার ভোররাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সহযোগী আরমানসহ তাকে গ্রেফতার করে ঢাকায় এনেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)। তাদেরকে আজই আদালতে তোলা হবে। সম্রাটের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা, চাঁদাবাজির অভিযোগে একাধিক মামলা হবে। এসব মামলা করা হবে মতিঝিল বা রমনা থানায়। ক্যাসিনো ও চাঁদাবাজি মামলার জন্য সম্রাটকে ৭ থেকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ারও আবেদন করা হবে বলে র্যাব সূত্রে জানা যায়।
উল্লেখ্য, গেল মাসে চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম আলোচনায় আসে। অভিযানে যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। কিন্তু সম্রাট ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযান শুরুর প্রথম তিন দিন তিনি দৃশ্যমান ছিলেন। ফোনও ধরতেন। এরপরই তিনি গা ঢাকা দেন। দেশত্যাগের চেষ্টাও করেন।
১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব। প্রথম দিন ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালায় র্যাব। এরপরই গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্লাবটির সভাপতি খালেদ হোসেন ভুঁইয়াকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরা মনে করেন, ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক সম্রাট।
অভিযান শুরুর পর গত ২২ সেপ্টেম্বর সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত একটি আদেশ দেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে পাঠানো হয়। তাঁর ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়।
Another test comment as reply.