সম্পদ গড়া নয়, জুয়া খেলাই যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের একমাত্র নেশা ছিল বলে জানিয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, আর কিছুই নয়, শুধু জুয়া খেলেতেই সিঙ্গাপুরে যেত সে। শুধু জুয়া খেলাই তার একমাত্র শখ ও নেশা। রোববার সম্রাটের বাসায় র্যাবের অভিযানকালে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন শারমিন চৌধুরী।
এসময় তিনি আরও বলেন, জুয়া খেলা সম্রাটের নেশা ও শখ হলেও তার মাথায় একটা জিনিস ছিল তা হলো- অবৈধ কোনও টাকা সে তার সংসারে খরচ করত না।
শারমিন চৌধুরী বলেন, সম্রাট অনেক ভাল মানের একজন নেতা। যেহেতু কোন মিছিল মিটিংয়ের জন্য ছেলেদেরকে অনেক টাকা পয়সা দিতে হত, আমার মনে হয় সেই টাকার যোগান দিতেই সে ক্যাসিনো ব্যবসা শুরু করে। আর ক্যাসিনোর সব টাকা সে দলের জন্যই খরচ করত।
এদিকে, বহু আলোচনা ও উৎকণ্ঠার পর অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। যাকে নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই। এরই মধ্যে জানা গেছে, সম্রাটের তিনজন স্ত্রীর খবর। যাদের মধ্যে একজন সিঙ্গাপুরের নাগরিক বলেও নিশ্চিত করেছে তার পারিবারিক সূত্র।
জানা যায়, বাংলাদেশী দুই জন স্ত্রীর মধ্যে ১ম পক্ষের স্ত্রী বাড্ডায় থাকেন। এ সংসারে সদ্য পড়াশুনা শেষ করা সম্রাটের এক মেয়ে রয়েছে। তবে সম্রাট ১ম স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন না। তিনি থাকতেন দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে মহাখালীর ডিওএইচএস’র বাসায়। এ সংসারে তার একমাত্র ছেলে মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।
এদিকে গত দুই বছর ধরে মহাখালিস্থ ২য় স্ত্রীর বাসায়ও যাতায়াত বন্ধ করেন সম্রাট। এসময়ে তিনি কাকরাইলের ভূঁইয়া ম্যানশনে নিজ কার্যালয়ে থাকতেন। তবে গাড়ি চালকের খরচসহ পরিবারের সব খরচ দিতেন তিনি।
অন্যদিকে সম্রাটের সিঙ্গাপুরের নাগরিক স্ত্রীর বিষয়ে নিশ্চিত করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন। তিনি জানান, মেয়েটি তারও বন্ধু ছিল, পরে সম্রাটের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা হয়।
এছাড়া সম্রাটের রয়েছে আরও দুই ভাই। এক ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন। আরেক ভাই সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। সম্রাটের মা ভাইদের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। সম্রাটদের গ্রামের বাড়ি ফেনীতে।
এদিকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রোববার ভোররাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সহযোগী আরমানসহ তাকে গ্রেফতার করে ঢাকায় এনেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)। তাদেরকে আজই আদালতে তোলা হবে। সম্রাটের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা, চাঁদাবাজির অভিযোগে একাধিক মামলা হবে। এসব মামলা করা হবে মতিঝিল বা রমনা থানায়। ক্যাসিনো ও চাঁদাবাজি মামলার জন্য সম্রাটকে ৭ থেকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ারও আবেদন করা হবে বলে র্যাব সূত্রে জানা যায়।