দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এডিস মশার জীবানুবাহি ডেঙ্গুজ্বরে আক্তন্ত রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুজ্বরে আক্তন্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং বিভিন্ন হাসপাতালে প্রতিনিয়ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্তন্ত নতুন রোগী ভর্তির খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নগরীতে এডিস মশা/ ডেঙ্গুমশা ও জলাবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো, আতিকুল ইসলাম সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছেন এবং বিশেষ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নুর তাপস এডিস মশা/ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ৪ জুলাই থেকে ২৫টি ওয়ার্ডে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে ৩ দিনের বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু করেছেন। সকাল ১০টায় করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান দক্ষিণ সিটির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের বলদা গার্ডেন এলাকায় এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, অ ল-৫ এর আ লিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার এবং ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারওয়ার হাসান আলো প্রমুখ কর্মকর্তারা।
এদিকে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম সারাদেশের এডিস মশার জীবানুবাহি ডেঙ্গুজ্বরের বিষয়ে পরিচালিত জরিপের ফল উপস্থাপন কালে বলেছেন ঢাকা মহানগরের ৪৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ বহুতল ভবনে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। রাজধানীর সবাই ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছেন । অধিদপ্তরের সভাকক্ষে দেশে চলমান ডেঙ্গু সংক্রমণের প্রি-মনসুন সার্ভের ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, এডিস মশা খুবই স্বল্প জায়গায় লার্ভা ছড়াচ্ছে। যেমন- পার্কিংয়ে কিংবা গেটের নিচে সামান্য জায়গায় জমে থাকা পানিতে অনেক বেশি ডেঙ্গুর লার্ভা পাওয়া গেছে।তিনি আরও বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২০ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ বাড়িতে ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪০টি ওয়ার্ডে এবং দক্ষিণ সিটির ৫৮টি ওয়ার্ডে সর্বমোট ৩ হাজার ১৪৯টি বাড়িতে সার্ভে (জরিপ) করেছি, এর মধ্যে ৫৪৯টি বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম, রাস্তাঘাট উঁচু হওয়ায়, অব্যবহৃত নিচতলায়, ভবনের পার্কিংয়ে জমে থাকা পানির কারণে এসব বহুতল ভবনে পাওয়া যাচ্ছে লার্ভা।অনুষ্ঠান থেকে আরও জানানো হয়, ঢাকা মহানগরের সবাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। সবার সচেতনতা এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, কীটতত্ত¡বিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার, দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালের পরিচালকরা। #কাশেম