নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই ও চুরি হওয়া দামী মোবাইল ফোনের সেটের গোপন আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বাজারে বিক্রয়কারী চক্রের ৩জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে তাদের কাছ থেকে ১১০টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চোরাই মোবাইল ফোন, একটি ল্যাপটপ, একটি কম্পিউটারের সিপিইউ, দুইটি এসএসডি ড্রাইভ জব্দ করা হয়।
এই চক্রটি নানা কৌশলে ওইসব মোবাইল ফোন সেটের শোরুমে পুনরায় বিক্রি করে আসছে। এক্ষেত্রে অ্যাপস ব্যবহার করে তারা মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করতেন। পুলিশের অভিযানে গত সোমবার পল্লবী থেকে গ্রেফতার হওয়া ওই চক্রের সদস্য মো. রাসেল, কবির ও সিয়াম এই তথ্য জানায়।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রæয়ারি) দুপুরে মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ‘গত সোমবার পল্লবী থেকে ওই চক্রের সদস্য মো. রাসেলকে (৩১) প্রথম গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই দিন কাফরুল থানা এলাকা থেকে মো. কবির (২৫) ও মো. সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়।’
এ বিষয়ে মিরপুর বিভাগের ডিসি মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, ‘বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পারি রাসেলসহ কয়েকজন ব্যক্তি ছিনতাই বা চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে পুনরায় বাজারজাত করে আসছেন। এরপর অভিযান চালিয়ে রাসেলকে ৬টি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপসহ গ্রেফতার করি। ল্যাপটপ ও মোবাইলে অ্যাপসের মাধ্যমে চোরাই মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করতেন রাসেল।’
তিনি বলেন, ‘রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে চক্রের সদস্য কবির ও সিয়ামের নাম জানতে পারি। শাহ আলী প্লাজার ৫ম তালার ভূঁইয়া টেলিকম নামের দোকানে চক্রটি মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করতো। ওই মার্কেটে অভিযান চালিয়ে কবির ও সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০৪টি চোরাই মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক জব্দ করা হয়।’
মিরপুর বিভাগের ডিসি বলেন, ‘আসামি রাসেল জানিয়েছেন তিনি গত দেড় বছর ধরে এই কাজে যুক্ত তিনি। রাসেলের চক্রের কাজ হলো চুরি ও ছিনতাই করা মোবাইল ফোনের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন। চোরাই মোবাইল চক্রের কিছু সদস্য চুরি ও ছিনতাই করা মোবাইল ফোন কম দামে কেনেন। পরে সেগুলোর আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে বিক্রির জন্য বিভিন্ন দোকানে ডিসপ্লে করেন।’
জসীম উদ্দীন মোল্লা আরও বলেন, ‘মোবাইল ছিনতাই ও চুরি প্রতিরোধে আমরা সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। যখনই তথ্য পাচ্ছি তখনই চোরদের ধরতে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।’
এক প্রশ্নের জবাবে মিরপুর বিভাগের ডিসি বলেন, ‘মিরপুরের সাত থানায় মেসেজ দেওয়া হয়েছে। যেসব মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে বা হারিয়ে গেছে ওই মোবাইল ফোনের জিডি বা মামলা যাচাই-বাছাই করে সেগুলো প্রকৃত মালিককে ফেরত দেওয়া হবে।’