দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:
রাজধানীর বনানীর মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পার্কজুড়ে দেশের ঐতিহ্যবাহী সব খাবারের মেলা বেশ জমে উঠেছে । মেলার সব স্টলই মজাদার খাবারের ছড়াছড়ি। এমন সব ঐতিহ্যবাহী খাবারের আইটেম নিয়ে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে মুজিব’স বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল ‘টেস্ট অব বাংলাদেশ’। এতে অংশ নিয়েছে দেশের বিখ্যাত ৪০টি খাবারের রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) দেশের খাবারের ঐতিহ্যকে সবার কাছে তুলে ধরার জন্যই এবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে ফুড ফেস্টিভ্যাল। এই মেলাটি বিকেলে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। এই ফুড ফেস্টিভ্যাল আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে। এই ফুড ফেস্টিভ্যাল সবার জন্য উন্মুক্ত থাকছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক ছাদের নিচে দেশের সব ঐতিহ্যবাহী ও বিখ্যাত খাবারের মেলার আয়োজন সত্যিই আনন্দের বিষয়।

সুত্র মতে, এই মেলায় আছে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মন্ডার স্টল, তেমনি রয়েছে বিখ্যাত রাজা চা, কুমিল্লা মাতৃভান্ডার, হাজি বিরিয়ানি, বিউটি লাচ্ছি। একইভাবে পাঁচ তারকা হোটেলের খাবার নিয়ে উপস্থিত রয়েছে হোটেল ওয়েস্টিন, হোটেল শেরাটনের স্টল। এতে অংশ নিয়েছে দেশের বিখ্যাত ৪০টি খাবারের রেস্টুরেন্ট ও ফুড কোর্ট।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ইভেন্টটিতে ৪০টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। যেসব রেস্টুরেন্ট ও খাবারের আইটেম নিয়মিত মানুষের মুখে মুখে আলোচিত হয় সেগুলো নিয়েই এই আয়োজন।

বাংলাদেশ ফুড ফেস্টিভ্যাল ‘টেস্ট অব বাংলাদেশ’ এ অংশ নেওয়া মুক্তাগাছার গোপাল পালের প্রসিদ্ধ মন্ডার দোকানের স্বত্বাধিকারী রাজেশ পাল বলেন, এক ছাতার নিচে দেশের বিখ্যাত সব খাবারের আয়োজনটা আসলেই অসাধারণ। সাধারণ মানুষের কাছে এসব ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ পৌঁছে দিতেই আমরা এখানে স্টল নিয়েছি। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই এজন্য যে এর আগে কখনোই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এত বড় আয়োজন হয়নি।

জানা যায়,রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই সরিবারে ছুটে আসছেন এই খাবারের মেলায়। এরমধ্যে ধানমন্ডি থেকে ছুটির দিনে এই ফুড ফেস্টিভ্যালে এসেছেন সাদিকুর রহমান এবং তার স্ত্রী। সাদিকুর রহমান বলেন, আমরা দুজনেই ভোজনপ্রেমী। ঐতিহ্যগত যে খাবার আছে সেগুলো টেস্ট করতে ভালোবাসি। সেকারণেই যখন এমন আয়োজনের কথা জানতে পারলাম তখন ছুটে এসেছি। সকাল থেকেই ঘুরছি যেটা ভালো লাগছে খেয়ে দেখছি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব ঐতিহ্যের খাবার এক সঙ্গে আয়োজন করা খুব কঠিন। এর ফলে আমরা এক স্থানেই দেশের সব বিখ্যাত খাবারগুলো পেয়ে যাচ্ছি। এটি আসলেই চমৎকার একটি আয়োজন মনে হচ্ছে।

গণমাধ্যমকে আয়োজকরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে আছে পুরান ঢাকার নাজিরা বাজারের বিসমিল্লাহ কাবাব, হাজি বিরিয়ানি, বিউটি লাচ্ছি, আল-আমিন বাকরখানি ও রুটি, মোহাম্মদপুরের মুস্তাকিমের চাপ ও বোবার বিরিয়ানি।

এছাড়া রয়েছে বারকোড ক্যাফে, সিস্টেম রেস্টুরেন্ট, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মন্ডা, সিলেটের পানসী রেস্টুরেন্ট, তুলশিমালা, মনিপুরি খাবার, কক্সবাজার সি ফুড, চিং’স কিচেন, আদর্শ মাতৃভান্ডার, কুমিল্লা মাতৃভান্ডার, ঘুড্ডি কমিউনিকেশনসের চায়না পিঠা ও নারিকেলের মাংস, জামতলার সাদেক গোল্লা, কুষ্টিয়ার কুলফি মালাই, সাতক্ষীরার সাগর সুইটস, খুলনার আব্বাস হোটেলের খাসির চুই ঝাল, পাবনার সতেজ’র নিমকি পাপড়, নওগাঁর মা প্যারা সন্দেশ, শম্পা দধি, টিওয়াই ফুডের প্যালকা ও ছ্যাঁকা, দিনাজপুরের চাল, চিড়া ও পাপড়, বরিশালের মাটির খাবার ঘর রেস্টুরেন্ট, সন্ধ্যা নদীর ইলিশ, ব্যাসকাঠির হাতে ভাজা মুড়ি, জয় গুরু মিষ্টান্ন ভান্ডারের গুটিয়া সন্দেশ, কাঁঠালবাড়ির কাঁঠালের আনারস ও জামের আঁচার, আলফা অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড অ্যাগ্রোর চিংড়ি, সুন্দরবনের মধু ও জুস ভ্যালির নানান ফলের জুস। এসব ছাড়াও পাঁচ তারকা হোটেলের খাবার নিয়ে উপস্থিত আছে হোটেল ওয়েস্টিন, হোটেল শেরাটন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেল ও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের রেস্টুরেন্ট। #কাশেম