সর্বশেষঃ
র‌্যাক স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ফুটবলে ৪-০ গোলে বিজয়ী বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন ‘শেখ বশিরের’ বিরুদ্ধে হত্যা মামলা: বাদী নিশ্চিত নয়, উপদেষ্টা সেখ বশির আসামি বিমানবন্দরে অতিথির সম্মান পাবেন প্রবাসীরা: ড. মুহাম্মদ ইউনূস গুলশানে রাস্তা ও ফুটপাতের ২৫০টি অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ফরিদপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ৫ জন আটক বন্যায় ক্ষতবিক্ষত রায়পুর-লক্ষ্মীপুর-ঢাকা মহাসড়ক , জনভোগান্তি ১২০ টাকায় পুলিশের টিআরসি নিয়োগ: পুলিশ সুপার ফরিদপুর পদ্মাসেতু থেকে শরীয়তপুর  সড়কের কাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবীতে মানববন্ধন ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে ১,৩১,৩৭৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে ‘সরকারি প্রকল্পে অপচয় রোধে সচেষ্ট থাকতে হবে’
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ নগরবাসী, ডেঙ্গুর পর গোদ রোগের আশঙ্কা

দূরবীণ নিউজ প্রতিনিধি:

অতিরিক্ত মশা আর মাছির ঊৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন নগরবাসী। অথচ এসব দেখার দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রের নেতৃত্বে বিশাল কর্মী বাহিনী। এছাড়াও দুই সিটিতেই রয়েছে পৃথক স্বাস্থ্য বিভগের কর্মকর্তা ও কর্মীদের জন্য মশা মারার বড় অংকের বাজেট। অবাক হলেও ঘটনাটি সত্য। মশা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, মশার কামড়ে ফাইলেরিয়া রোগীর মাধ্যমে গোদ রোগ ছড়াতে পারে।

অন্তত ৫০০ থেকে এক হাজার মশার কামড়ে ‘গোদ রোগ’ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। তবে এখনো বাংলাদেশকে গোদ রোগমুক্ত ঘোষণা করা হয়নি।রোগ রোগ হলে প্রথমতো হাত এবং পা ফুলে যায় এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই শরীরের আক্রান্ত স্থানটির চামড়া মোটা ও শুষ্ক হয়ে যায়। এছাড়াও ত্বকে ক্ষত বা গর্ত হতে দেখা যায় এবং ত্বকের বর্ণ গাঁড় হতে থাকে।

গোদ রোগকে এলিফেন্টাইটিস বা লিম্ফেটিক ফাইলেরিয়াসিসও বলা হয়। আণুবীক্ষণিক ও সুতার মত দেখতে পরজীবী কীটের দ্বারা হয়ে থাকে এই রোগ যা নারী-মশার মাধ্যমে ছড়ায়। লসিকা তন্ত্র শরীরে তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। পূর্ণবয়স্ক কীট মানুষের লসিকা তন্ত্রে বাস করে। এই পরজীবী মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের রক্তে প্রবেশ করে এবং লসিকা নালীতে ভ্রমণ করে এবং পূর্ণতা লাভ করে। এভাবেই ফাইলেরিয়া বিস্তার লাভ করে। ২০১৬ সালের এক সার্ভে রিপোর্টে ‘গোদ রোগের’ বিষয়টি উঠে এসেছে। তাদের মতে মশা নিয়ন্ত্রণে থাকলে ‘গোদ রোগ’ নিয়ে আতঙ্কিত হবার কারণ নেই।

সূত্র মতে, গত জানুয়ারিতে ঢাকার উত্তর সিটির মেয়র মশা মারার কৌশল জানতে আমেরিকায় সফর করেছেন বিশাল টিম নিয়ে। মশা মারার কজের সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই এমন লোকজনকেও নিয়ে আমেরিকা ঘুরে এসেছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। এখন প্রশ্ন উঠেছে আমেরিকার কৌশল গেল কোথায় । নগরীতে মশার উৎপাত কমছে না কেনো। মশা নিয়ন্ত্রণের বাইড়ে চল যাচ্ছে। প্রায় গণমাধ্যমে ঢাকার দুই সিটিতেই মশা মারা নিয়ে চলছে নানা ধরনের গাল গপ্প প্রচার করা হয়।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি ৫৬৬ জন ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। ফেব্রæয়ারি মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ১৬৬ জন, মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। তবে মার্চে এখনো ডেঙ্গুতে কারো মৃত্যু হয়নি। রাজধানীতে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বেড়েছে। কিউলেক্স মশার কামড়ে ডেঙ্গুর ভয় না থাকলেও ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগ নিয়ে কিছুটা ভয় রয়েছে।

বিশিষ্ট কীটতত্ত¡বিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার গণমাধ্যমকে বলেন, শীতের পর হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়েছে, সে কারণে আমরা প্রচুর মশা দেখতে পাচ্ছি। তিনি বলেন, এর আগে যে মশাগুলো প্রকৃতিতে লার্ভা হিসেবে ছিল সেগুলো একসঙ্গে ফুটে প্রচুর মশা বের হয়। আর সেই মশার ঝাঁক আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি, যা আসলে বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত কমবে না।

ড. কবিরুল আরও বলেন, সাধারণত শীতের পরে পানির ঘনত্ব বেড়ে যায়। অর্থাৎ অনেকদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নালা-নর্দমায় যে পানি থাকে, তা ঘন হয়ে যায়। এই পানিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। এগুলো কিউলেক্স মশার খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফলে এই সময়ে কিউলেক্স মশার প্রজননটাও বেড়ে যায়।

ঝুঁকি প্রসঙ্গে অধ্যাপক কবীরুল বাশার বলেন, কিউলেক্স মশা আমাদের দেশের কিছু অঞ্চলে ফাইলেরিয়া রোগ ছড়ায়। তবে ঢাকা শহরে এই রোগ ছড়ানোর কোনো ইতিহাস আমরা পাইনি। সুতরাং এই মশা দিয়ে খুব বেশি রোগ ছড়িয়ে যাবে, এমনটা বলার সুযোগ নেই। পাশাপাশি কিউলেক্স মশার কামড়ে যেহেতু ডেঙ্গু হয় না, তাই এই সময়ে ডেঙ্গু ছড়ানোর সম্ভাবনাও আপাতত নেই। তবে এটা আমাদের জন্য একটা বিরক্তির কারণ।

করণীয় প্রসঙ্গে কবিরুল বাশার বলেন, যদি মশাকে ঠিকমতে নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, বিশেষ করে ড্রেন, ডোবা, নর্দমা এগুলো পরিষ্কার করে যদি লার্ভিসাইড প্রয়োগ না করা হয়, তাহলে মশা কমবে না। এজন্য আমি বলব প্রতিবছরের জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারিতে যেন সরকার বা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নালা, নর্দমা ও ড্রেনগুলো পরিষ্কারের একটা অভিযান পরিচালনা করে লার্ভিসাইড প্রয়োগ করা হয়। তাহলে মশা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

চিকিৎসকদের মতে ফাইলেরিয়া রোগে মানুষের হাত-পা ও অন্যান্য অঙ্গ অস্বাভাবিক ফুলে ওঠে। একে স্থানীয়ভাবে গোদ রোগ বলা হয়। এটি একটি কৃমি জাতীয় রোগ, যা ক্ষুদ্র পরজীবী জীবাণুর আক্রমণে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়। এই পরজীবীর জীবাণু মানুষের শরীরে প্রবেশ করে মশার কামড়ে।

চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয়েছে, ফাইলেরিয়া রোগ একটি মারাত্মক রোগ। ফাইলেরিয়া কৃমিজাতীয় রোগ হলেও এই রোগের পরজীবী আমাদের অন্ত্রে বাস করে না। ফাইলেরিয়া জীবাণু রোগীর লসিকানালীতে বৃদ্ধি পেয়ে পূর্ণবয়স্ক হয় এবং লসিকানালীতে প্রদাহের সৃষ্টি করে। কালক্রমে লসিকানালী ফুলে যায় ও বন্ধ হয়ে লসিকা প্রবাহে ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়। বাংলাদেশের উত্তরাংশে এই রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।

বাংলাদেশে ফাইলেরিয়া রোগ ছড়ায় মূলত কিউলেক্স মশার দুটি প্রজাতি এবং ম্যানসোনিয়া মশার একটি প্রজাতির মাধ্যমে। এখন পর্যন্ত দেশের ৩৪টি জেলায় ফাইলেরিয়া আক্রান্ত রোগী দেখা গেছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ফাইলেরিয়া এন্ডেমিক আকারে ছড়িয়ে আছে দেশের ১৯টি জেলায়।

ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান বলেন, কিউলেক্স মশায় সাধারণত কোনো জটিলতা তৈরি হয় না। তবে আমাদের ফাইলেরিয়া এন্ডেমিক আছে ১৯টি জেলায়। ওই সব জায়গায় যদি ফাইলেরিয়া রোগী থাকে, তার মাধ্যমে গোদ রোগ ছড়াতে পারে। তবে সেটি কিন্তু দু-একটা মশার কামড়ে হয় না। গোদ রোগ ছড়ানোর জন্য অন্তত ৫০০ থেকে এক হাজার কামড় লাগে। কাজেই সেই আশঙ্কা আপাতত নেই। কারণ আমরা খুব শিগগিরই বাংলাদেশকে গোদ রোগমুক্ত ঘোষণা করতে যাচ্ছি। আমরা ২০১৬ সালের দিকে সার্ভে করে দেখেছি এটি প্রায় মুক্ত হওয়ার পথে।

তিনি আরও বলেন, মশা কামড় দিচ্ছে, তার মানে হলো আমাদের একটি সিগন্যাল দিচ্ছে যে মশা বেড়ে গেছে। এরমধ্যে কিউলেক্স মশার পাশাপাশি এডিস মশাও থাকার সম্ভাবনা আছে। তবে এডিস মশা থাকলেই হবে না, সেই মশাকে ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস বহন করতে হবে। সর্বোপরি আমরা এই মুহূর্তে মশা নিয়ে খুব বেশি ঝুঁকি দেখছি না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সহকারী পরিচালক ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকায় গত এক বছরে এখন পর্যন্ত চিকুনগুনিয়া নেই। ডেঙ্গু সংক্রমণও এখন একদম নেই বললেই চলে। আমরা যে মশাগুলো দেখছি সেগুলো কিউলেক্স মশা, এগুলো শুধু মানুষের বিরক্তি তৈরি করে; কামড়ায়, চারপাশে ঘুরঘুর করে।

স¤প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের এক গবেষণায় বেরিয়ে আসছে, রাজধানীতে এলাকাভেদে একজন মানুষকে প্রতিঘণ্টায় গড়ে ১৫০টি মশা কামড়ায়। অন্যান্য বছরের তুলনায় রাজধানীতে আনুপাতিক হারে মশার ঘনত্ব প্রায় আটগুণ বেড়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষকরা বলছেন, গত বছরের জুন-জুলাইয়ের তুলনায় এই মার্চে মশার ঘনত্ব প্রায় চার-পাঁচগুণ বাড়তে পারে। আমাদের গবেষক দল বছরের অন্যান্য সময়ে (জুন-জুলাইয়ে) লার্ভার ঘনত্ব পেত প্রতি ডিপে গড়ে ১৫ থেকে ২০টি, যেটি বর্তমানে ৫০-এর বেশি। আবার ম্যান পার আওয়ার উড়ন্ত মশার ঘনত্ব ওই সময় আমরা পেতাম ২০-এর কম, যা বর্তমানে গড়ে ১৫০-এর বেশি।

# কাশেম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.


অনুসন্ধান

নামাজের সময়সূচী

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:০২ পূর্বাহ্ণ
  • ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ
  • ৩:৩৬ অপরাহ্ণ
  • ৫:১৫ অপরাহ্ণ
  • ৬:৩১ অপরাহ্ণ
  • ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন জরিপ

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন লিপসার্ভিসের দলে পরিণত হয়েছে।’ আপনিও কি তাই মনে করেন? Live

  • হ্যাঁ
    25% 3 / 12
  • না
    75% 9 / 12