দূরবীন নিউজ ডেস্ক :
অবশেষে বহুল আলোচিত করতারপুর করিডোর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। গত ২৪ অক্টোবর করতারপুর করিডরের জিরো পয়েন্টে ভারতের পক্ষে চুক্তিপত্রে সই করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এস সি এল দাস এবং পাকিস্তানের পক্ষে সই করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মাদ ফয়সাল। খবর পার্সটুডের।
এই চুক্তির ফলে ভিসা ছাড়াই ভারত থেকে শিখ তীর্থযাত্রীরা পাকিস্তানের করতারপুর সাহিব গুরুদ্বারে যাতায়াত করতে পারবেন। যদিও পরিচয়পত্র হিসেবে তাদেরকে পাসপোর্ট সঙ্গে করে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু তাতে কোনও স্ট্যাম্প দেয়া হবে না।
আগামী ৯ নভেম্বর করিডোরটি উদ্বোধন করবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন ও চরম উত্তেজনার মধ্যেও করতারপুর করিডোরকে পুণ্যার্থীদের জন্য চালু করার উদ্যোগ শেষপর্যন্ত বাস্তবায়িত হওয়ায় শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন বেশ খুশি।
এর আগে বিএসএফের নজরদারিতে কিছু ভক্ত দূরবীন দিয়ে করতারপুর সাহিব গুরুদ্বার দর্শন করতেন। ভারতের পাঞ্জাবের ডেরা বাবা নানক গুরুদ্বারের সঙ্গে পাকিস্তানের করতারপুরের দরবার সাহিব গুরুদ্বারকে যুক্ত করবে ওই করিডোর।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের নারোয়াল জেলায় সীমান্ত থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত করতারপুর গুরুদ্বার শিখদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ধর্মস্থান। এই গুরুদ্বারে জীবনের শেষ ১৮ বছর অতিবাহিত করেছিলেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক। দু’দেশের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী তীর্থযাত্রীরা প্রতিদিন সকালে যাবেন এবং সন্ধ্যায় তারা ভারতে ফিরে আসবেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী একদিনের সফরের জন্য প্রত্যেক ভারতীয় শিখ পুণ্যার্থীর কাছ থেকে খুবই সামান্য ২০ ডলার নেয়া হবে। এই করিডোরের পেছনে আমাদের যা খরচ হয়েছে বা হবে, সেই তুলনায় এইটুকু অর্থ কিছুই নয়।’
অবশ্য ভারতীয় পুণ্যার্থীদের কাছ থেকে ওই টাকা না নেয়ার জন্য ইসলামাবাদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু, তাতে আমল দেয়নি ইমরান খানের সরকার।
এদিকে দৈনিক পাঁচ হাজার পুণ্যার্থীকে করিডোর দিয়ে যাতায়াতের ছাড়পত্র দিয়েছে পাকিস্তান। এর ফলে দেশটি দৈনিক এক লাখ ডলার উপার্জন করবে। ভারত সরকারের কর্মকর্তা সূত্রে প্রকাশ, করতারপুর করিডোর থেকে পাকিস্তান বছরে প্রায় ২৫৯ কোটি টাকা (পাকিস্তানি মুদ্রায় ৫৫৫ কোটি রুপি) আয় করবে।
এদিকে, ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা মনিশ তিওয়ারি পুণ্যার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়কে ‘জিজিয়া কর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে টার্গেট করে বলেছেন, বিজেপি সরকারের উচিত ওই জিজিয়া কর পরিশোধ করা। #