দূরবীণ নিউজ প্রতিবেদক :
ঘুষ গ্রহণ ও অবৈধ উপায়ে প্রায় ১৩ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন অভিযোগে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নোয়াখালী সার্কেলের সহকারী পরিচালক মো. ফারহানুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ বিআরটিএ’র ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন দুদক উপ-পরিচালক মো. রফিকুজ্জামান। মামলা নম্বর ১৩ । মামলায় আসামির বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আরিফ সাদেক গণমাধ্যমকে বিআরটিএ’র নোয়াখালী সার্কেলের সহকারী পরিচালক মো. ফারহানুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামি মো. ফারহানুল ইসলাম ইউসিবিএল এবং সোনালী ব্যাংক ব্যতীত ৬টি হিসাবে ঘুষ, দুর্নীতি ও অবৈধভাবে অর্জিত ১২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা লেনদেন করেন। তিনি ২০১২ থেকে ৩ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ৬ বছর আট মাসে ছয়টি ব্যাংক হিসাব খোলেন। এর মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গুলশান শাখার সঞ্চয়ী হিসাবেই জমা করেন ছয় কোটি ৯২ লাখ টাকা।
আরো অভিযোগ রয়েছে, বিআরটিএ.র সহকারী পরিচালক মো. ফারহানুল ইসলাম গত ২০১২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ইউসিবিএল ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক এবং আইডিএলসিতে সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব ও ক্রেডিট কার্ড হিসাবসহ মোট ১০টি হিসাব তার মা ও ভাইয়ের নামে পরিচালনা করেন।
মো. ফারহানুল ইসলাম নিজের, তার ভাই মো. রায়হানুল ইসলাম, মা লুৎফুন নাহারের নামে মোট চারটি ব্যাংক হিসাব এবং দুইটি ক্রেডিট কার্ডের হিসাব খুলে ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত টাকা বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারায় অপরাধ করেছেন।
এছাড়া একই শাখার চলতি হিসাবে ১৪ লাখ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ভিসা ক্রেডটি কার্ডের হিসাবে ১৮ লাখ টাকা, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের মাস্টার ক্রেডিট কার্ড হিসাবে ২৮ লাখ টাকা ও তার আপন ভাই মো. রায়হানুল ইসলামের নামে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গুলশান শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাবে এক কোটি ১৩ লাখ টাকা, ডাচ-বাংলা ব্যাংক বসুন্ধরা শাখার একটি সঞ্চয়ী হিসাবে ১১ লাখ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছেন দুদক কর্মকর্তারা।
মা লুৎফুন নাহারের নামে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের মিরপুর-১০ সার্কেল শাখার একটি সঞ্চয়ী হিসাবে এবং আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের গৃহঋণ হিসাবে চার কোটি আট লাখ টাকা লেনদেনের প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।
চাকরিতে যোগ দেওয়ার আট বছরেই বিআরটিএ নোয়াখালী সার্কেলের সহকারী পরিচালক মো. ফারহানুল ইসলাম অবৈধ উপায়ে ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে ১৩ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।#